জাপানের কিউশু দ্বীপের মিয়াজাকি অঞ্চলে উৎপাদিত হয় 'তাইয়ো -নো -তামাগো'। এর টকটকে লাল রঙের কারণে বিশেষ জাতের এই আম 'সূর্যের ডিম’ নামে পরিচিত। এই আম শুধু বিশ্বের সবচেয়ে দামি নয় -সবচেয়ে দুর্লভও বটে। এক একটি আমের ওজন গড়ে ৭০০গ্রামের মতন ও ১টি আমের দাম ৬০০০/- থেকে ৭০০০/- টাকা। শুধু তাই নয় প্রতিবছর মিয়াজাকিতে নিলামে সবচেয়ে ভালো আম লক্ষ টাকাতেও বিক্রি হয়।
অত্যন্ত যত্নে শৈল্পিক পরিচর্যায় উৎপাদিত হয় বলে এর এতো দাম। মিয়াজাকির প্রাকৃতিক পরিবেশ আম চাষের উপযোগী নয় বলে এখানে সকল আম 'গ্রীন হাউস' পদ্ধতিতে চাষ হয়। গ্রীন হাউসের ভিতর নিয়ন্ত্রিত তাপের মাধ্যমে বেড়ে ওঠে এই সূর্যের ডিম। এই গাছ ছোট হয় - ৬ফুট মতো। প্রাপ্ত বয়স্ক গাছ থেকে সর্বোচ্চ ৫০টি আম পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক ভাবে বড় সাইজের আম পেতে চাষীরা ৬০% মুকুল ছেঁটে ফেলে ও নির্বাচিত আমগুলোকে ক্লিপের সাহায্যে ঝোলানো হয় এবং ৩ মাসের ব্যবধানে আমগুলো বেশ বড় হয়ে উঠলে অতি যত্নে সংগ্রহ করা হয়। প্রতিবছর এপ্রিলে মিয়াজাকি বাজারে এই আমের নিলাম হয়। আকার, রং ও স্বাদের উপর নির্ভর করে দাম নির্ধারিত হয়। ৩০- ৫০ টি আম সর্বোৎকৃষ্ট হয় যার মূল্য ৫লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত হতে পারে। স্বাদ নয় এই আমের বহুমূল্যতার কারণ তার দুষ্প্রাপ্যতা|
নিলামের ক্রেতারা অধিকাংশ জাপানের ফল ব্যবসায়ী। তারা আরো বেশি দামে সুপার মার্কেটে এই আম বিক্রি করেন।তবে নিলামে সর্ব সাধারণের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে আমের রসাস্বাদনের ব্যবস্থা থাকে। উপহার আদান প্রদান জাপানের শ্রেষ্ঠ রীতি, তার উপর এই ফল উপহার সর্বোচ্চ সম্মানে পরিগণিত হয়। তাই এই আম উপহার প্রদানের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয়। যদিও গুণগত মানে আমাদের বঙ্গের হিমসাগর আমের রাজা, তার স্বাদের কাছে এর স্বাদ অতটা প্রাধান্য পায় না। তবে দর্শনধারী এই আম স্বাদে কম হলেও বাজার দরে কিন্তু রাজা। ভোজন রসিকদের কাছে এই আমের চাহিদা অতটা না থাকলেও জাপানি সমাজে এর মর্যাদা একটু অন্যরকম। তবে মনের সুখে আম খাওয়ার মজা স্বদেশে পেলেও বিদেশে নেই। কিন্তু দামের কারণে এই আম বিশ্বের অন্যতম বিস্ময়।