পৃথিবীর আদি ভাষাগুলির একটি হল সংস্কৃত| কিন্তু সম্প্রতি দক্ষিণ ভারতে আবিষ্কৃত হয়েছে সবচেয়ে পুরনো সংস্কৃত লিপি। আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার এপিগ্রাফি বিভাগের মতে , সদ্যপ্রাপ্ত এই সংস্কৃত শিলালিপিটি দক্ষিণ ভারতে আজ পর্যন্ত প্রাপ্ত সবচেয়ে পুরোনো। এটি আবিষ্কৃত হয়েছে অন্ধপ্রদেশের গুন্টুরে চেব্রলু গ্রামে। পাওয়া গেছে সপ্তমাত্রিকা অর্চনা করার প্রমাণ। আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার এপিগ্রাফি বিভাগের অধিকর্তা ডঃ কে. মুনিরত্নমের মতে, তমব্রপের ভগবতী শক্তিমাত্রুকা (সপ্তমাত্রিকা) মন্দিরের দক্ষিণের প্রাসাদে (মন্দির) কার্তিক নামে এক ব্যক্তি রাজার সম্মাননায় এই লেখটির প্রথম অনুলিপি লেখেন। চেব্রলুর প্রাচীন নাম তমব্রাপ।
স্থানীয় ভীমেশ্বরা মন্দির সারাতে গিয়ে, একটি স্তম্ভ দেখে গ্রামবাসীরা সেখানকার কর্তৃপক্ষকে এই সপ্তমাত্রিকার হদিশ জানান। সপ্তমাত্রিকাটিকে দীর্ঘ বিশ্লেষণ করার পর গবেষকরা সংস্কৃত লিপির সময়কাল নিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। হিন্দুদের সাতজন নারী দেবতাই ছিলেন সপ্তমাত্রিকা, যাঁরা শক্তির প্রতীক রূপেই হিন্দু শাস্ত্রে পরিচিত। ডঃ কে. মুনিরত্নমের মতে, কদম্বা ফলক এবং চালুক্য তথা পূর্ব চালুক্য ফলকগুলিতে আগেই সপ্তমাত্রিক উপাসনার উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে এই নতুন শিলালিপিটি ২০৭ খ্রিস্টাব্দে সাতবাহন রাজা বিজয়ের পঞ্চম রাজ্যবর্ষে সপ্তমাত্রিকায় সংস্কৃত লিপি লেখা হয়েছিল, এমনটাই অনুমান গবেষকদের। আগে, চতুর্থ শতাব্দীতে পাওয়া নাগার্জুনকোন্ডার শিলালিপিই ছিল দক্ষিণ ভারতের সর্বপ্রাচীন সংস্কৃত লিপির নিদর্শন। কিন্তু এই নব আবিষ্কৃত সপ্তমাতৃকা সংস্কৃত লিপিটি এখনোও পর্যন্ত সর্ব প্রাচীনত্বের দাবিদার।
ইতিহাসের অবস্থান শুধু পাঠ্য বইয়েই যে গল্পের আকারে সীমাবদ্ধ থাকে না, তার প্রমান প্রতি নিয়ত দিয়ে চলেছে আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার নিরন্তর আবিষ্কার। শুধু ভারতেই নয়, গোটা পৃথিবীতেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হয়েছে ঐতিহাসিক তথ্যানুসন্ধানে। ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও তথ্যের কারণেই এর সংরক্ষণ আবশ্যক হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ ভারতের এই নতুন আবিষ্কার প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের অজানার সন্ধানের এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।