করনি মাতার মন্দির

দেবী করনির পুজো করা হয় রাজস্থানের করনি মাতার মন্দিরে। দেবী করনি ছিলেন এক সন্ন্যাসিনী। চতুর্দশ শতকে এক হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। হিন্দুদের বিশ্বাস, করনি ছিলেন মা দুর্গার অবতার। মা করনির আসল নাম ছিল ঋদ্ধি বাই। কম বয়সেই সংসার ধর্ম ত্যাগ করে সন্ন্যাসিনী হয়েছিলেন তিনি। তার ভক্তদের তালিকায় নাম ছিল যোধপুর ও বিকানীরের রাজ পরিবারের সদস্যদের। কিন্তু একদিন হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে যান দেবী করনি। তারপর থেকে আর খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর। তারপরেই তাঁর নামে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয় রাজস্থানের উদয়পুরে। মন্দিরটি নির্মাণ করিয়ে ছিল রাজ পরিবারের সদস্যরা। তবে মন্দিরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল এখানে বসবাসকারী ইঁদুর।

 

Karni1

 

প্রায় ২০-৩০ হাজার কালো ইঁদুরের বাস করনি মাতার মন্দিরে। এই ইঁদুর ‘কাব্বাস’ নামেই পরিচিত। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, প্রত্যেকটিই ইঁদুরই করনি মাতার সন্তান ও বংশধর। কথায় আছে, এক সময় মা করনির সন্তানরা কপিল সরোবরে জল খেতে গিয়ে ডুবে মারা যায়। তারপর করনি মা সকল সন্তানের জীবন ফিরিয়ে দেবার জন্য যমরাজের কাছে প্রার্থনা করেন। তখন যমরাজ তাদের প্রাণভিক্ষা দেন। কিন্তু তারা সকলেই ইঁদুর রূপে পুনর্জন্ম নেন। তাই ভক্তরা এই ইঁদুরের খাওয়া খাবার প্রসাদ হিসেবে গ্ৰহণ করেন। এছাড়াও যদি কোনও দিন ভুলবশত একটি ইঁদুরের প্রাণ যায় তাহলে একটি সোনার ইঁদুর দান করতে হবে মন্দিরকে। সাদা মন্দিরের দেখা পাওয়া অত্যন্ত সৌভাগ্যের লক্ষণ বলে মনে করা হয়।

 

Karni2

 

প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় এই ইঁদুর আসে মন্দিরে। ইঁদুরের খাওয়া এই প্রসাদ নেওয়া জন্য ভক্তদের লম্বা লাইন পড়ে মন্দিরে। জনপ্রিয় এই মন্দিরটির স্থাপত্যকলাও যথেষ্ঠ আকর্ষণীয়। সাদা মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি এই মন্দিরের প্রধান ফটকে রয়েছে একটি বিশাল সিংহমূর্তি। ভক্তদের বিশ্বাস এই সিংহের কানে নিজের মনের ইচ্ছা জানালে তা পূর্ণ হয়ে। প্রতিদিন ভোর চারটের সময় মন্দিরের দরজা খোলা হয়। প্রত্যেক বছর নবরাত্রির দিন প্রচুর মানুষের ভিড় দেখা যায় এই মন্দিরে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...