সমুদ্রের তলায় অক্টোপাসের সংসার। সম্প্রতি এমনই সংসারের খোঁজ পেয়েছেন সমুদ্রবিজ্ঞানীরা। প্রশান্ত মহাসাগরের কোস্টারিকা উপকূলে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই মাইল গভীরে অক্টোপাসের একটি প্রজননস্থলের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা। এমন আবিষ্কার এই প্রথম! এই প্রজননস্থলকে ‘অক্টোপাস নার্সারি’ বলছেন তাঁরা।
গত মাসের শুরুর দিকে ২০ জন বিজ্ঞানীর একটি দল তিন সপ্তাহের অভিযানের সময় অক্টোপাসের এই প্রজননস্থলের সন্ধান পেয়েছিলেন। সমুদ্রের এই অঞ্চলটি সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় ছিল এত দিন। এখন সমুদ্রের এই অংশকে সুরক্ষিত করার ব্যাপারে জোর দিতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা।
Read Also : মাত্র ২৩ বছরে ২১ একর জমি বানিয়ে নজির এমবিএ পাশ রাঘবের
এনজিও শ্মিট ওশান ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই আবিষ্কারের গুরুত্ব তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক জ্যোতিকা বিরমানি। তিনি বলেন, ‘কোস্টারিকা উপকূলে সমুদ্রপৃষ্ঠের ২ হাজার ৮০০ মিটার গভীরে এক নতুন অক্টোপাস নার্সারির আবিষ্কার হয়েছে। এটি তাদের সক্রিয় প্রজননস্থল। এই আবিষ্কার প্রমাণ করে, মহাসাগর সম্পর্কে আমাদের এখনও অনেক কিছু শেখার আছে।’
এই ইনস্টিটিউটেরই গবেষণা যান ‘ফালকোর’-এ চড়ে এই সমুদ্র অভিযান সম্পন্ন করেছিলেন আন্তর্জাতিক সমুদ্রবিজ্ঞানীদের এই দল।
২০১৩ সালে বিজ্ঞানীদের এক অভিযাত্রায় তাঁরা ডোরাডো আউটক্রপ নামের একটি পাথুরে অংশের সন্ধান পান। দেখা পাওয়া যায় মা অক্টোপাসদের। ডিম ফোটানোর জন্য সেখানে জড়ো হয়েছে তারা। এমন ঘটনা আগে কখনও দেখা যায়নি। এখানে অক্টোপাসের সংসার মূলত ‘মুসোক্টোপাস’ গণের। এদের আকার ছোট থেকে মাঝারি।
তবে সেই প্রজননস্থলটি আদৌ থাকবে কি না তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের সন্দেহ ছিল। গভীর সমুদ্রে থাকা অক্টোপাসদের শীতল পরিবেশ পছন্দ। তবে এই শিলাগঠনটি উত্তপ্ত খনিজসমৃদ্ধ হয় সেখানের জলপ্রবাহ ছিল উষ্ণ।
অবশ্য শেষ মিশনে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন যে ডোরাডো আউটক্রপ প্রকৃতপক্ষে একটি ‘সক্রিয় নার্সারি’। তাঁরা সেখানে ডিম ফুটে অক্টোপাস ছানাদের বেড়ে ওঠা পর্যবেক্ষণ করেছেন। পাশাপাশি আরও একটি অক্টোপাস প্রজননস্থ ল আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা। সেই কারণেও এই আবিষ্কার তাঁদের কাছে আরও বিশেষ।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মনটেরি উপকূলে আরও একটি নার্সারি আছে। সাম্প্রতিক দুই আবিষ্কারের ফলে অক্টোপাস নার্সারির সংখ্যা এখন তিনটিতে দাঁড়াল।
কোস্টারিকা উপকূলের নার্সারিতে পাওয়া অক্টোপাসগুলো মিউসোক্টোপাস প্রজাতির বলে মনে করা হচ্ছে। কোস্টারিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছ, এই আবিষ্কার সমুদ্র বিজ্ঞানীদের কাছে নতুন আবিষ্কারের দরজা খুলে দিল।