রামলাল-প্রেমলাল-লেজ কাটা, হাতির হামলা থেকে বাঁচতে এমন অভিনব নামকরণ কেন করলো গ্রামবাসীগণ?

এইবার হাতির উপদ্রব থেকে বাঁচতে নয়া উদ্যোগ নিল জঙ্গলমহলের অধিবাসীরা। দলছুট ও আক্রমণাত্মক হাতির থেকে নিরাপত্তার জন্য হাতিদের নামকরণ করল তারা।

হাইলাইট

        হাতির উপদ্রব থেকে বাঁচতে নয়া উদ্যোগ নিল জঙ্গলমহলের অধিবাসীরা।

        তাদের স্বভাব, চরিত্র ও দেহের গঠন অনুযায়ী হাতির নামকরণ করল তারা।

        রামলাল, প্রেমলাল, কালিঙ্গ, ফলগু বা কানকারবী

জঙ্গলমহলের হাতির সংখ্যা বছরের পর বছর বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই প্রায় ৮ থেকে ১০ টি হাতি জনবসতিপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। মূলত খাবার সন্ধানেই তারা একস্থান থেকে অন্যস্থানে যায় বা গ্রামে ঢুকে যায়। তবে এই কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষের জীবন।

কখন কোন হাতি হামলা করবে আর কোন হাতি শান্ত আচরণ করবে, তা গ্রামবাসীরা বুঝে উঠতে পারছেন না। তাই হাতিদের থেকে বাঁচতে তাদের স্বভাব, চরিত্র ও দেহের গঠন অনুযায়ী প্রায় ৮ থেকে ১০ টি হাতির নামকরণ করা হয়েছে। এই সম্পূর্ণ নামকরণটি করেছেন গ্রামবাসীরা। 

রামলাল, প্রেমলাল, কালিঙ্গ, জুরিলাল, শ্যামলাল, ফলগু বা কানকারবী -এমন বিভিন্ন নামে হাতিদের  নামকরণ করা হয়েছে। পুরুষ হাতি ও স্ত্রী হাতিদেরও চিহ্নিত করে তাদের নামকরণ করা হয়েছে। এর ফলস্বরূপ গ্রামবাসীরা খুব সহজেই বুঝতে পারছেন যে কখন কোন হাতি গ্রামে ঢুকছে এবং তাদের থেকে বাঁচার সঠিক উপায় কি।

যেমন রামলাল শান্ত স্বভাবের হাতি। এই ধরনের হাতি খাবারের সন্ধান করতে গ্রামের মধ্যে আসে, তবে সচরাচর এরা কোন মানুষের উপর আক্রমণ করে না। মানুষের ভিড়, পটকা, মশাল এসব কোন কিছুই তোয়াক্কা করে না রামলাল। সে খুব নিশ্চিন্ত মনে খাবার সন্ধান করে এবং খাবার পেলে সে আস্তে আস্তে ফিরে যায়। কিন্তু দাঁতা বা ফলগু নামক হাতির থেকে মানুষের ভয় পাওয়ার কারণ আছে, কারণ এরা মানুষ দেখলে আক্রমণাত্মক আচরণ করে। বিন্দুমাত্র আওয়াজ বা সামান্যতম আলো দেখতে পেলে করে তাকে অনুসরণ করে ছুটে যায়।

এই ধরনের হাতিদের মধ্যে অন্যতম আরেকটি হাতি হল কালিঙ্গা। এই বড় দাঁতের হাতিটি শান্ত স্বভাবের হলেও মানুষ বিরক্ত করলে তাড়া করে। আবার প্রেমলাল জুড়িলাল ও শ্যামলাল এই তিন ধরনের হাতিকে প্রায় একই রকম দেখতে। এরা মানুষের ভিড়, পটকা ও মশালকে ভয় পায় কিন্তু তারা সম্পূর্ণভাবে শান্ত স্বভাবের নয়। মানুষ দেখলে তেড়ে আসে।

এছাড়া স্ত্রী হাতিরও নামকরণ করেছেন গ্রামবাসীগণ। স্ত্রী হাতীর নামকরণ গুলি হল- কানকাবরী, ডি জে সার্জেন, লেজ কাটা। এই সবগুলো হাতিই খুব আক্রমণাত্মক স্বভাবের।

তাই এই অভিনব পদ্ধতিতে গ্রামবাসীদের জীবনযাত্রায় সুবিধা হবে বলে মনে করেছেন অনেকে। যেকোনো ধরনের হাতিই এলাকায় ঢুকলে গ্রামবাসীরা সেই হাতির নামে চিৎকার করে জানান দিতে পারবে অন্যজনকে। আর তার ফলেই গ্রামবাসীরা খুব সহজেই বুঝতে পারবে কোন হাতির থেকে বাঁচার জন্য কি রকম সুরক্ষা বা প্রস্তুতি প্রয়োজন।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...