‘চাঁদ’...ছোট থেকে আমরা ‘চাঁদ’-কে মামা বানিয়ে তার নানা গল্প শুনে আসছি| চাঁদ নিয়ে রোমাঞ্চকর গল্পের শেষ নেই| সব থেকে বেশি যেটা শোনা যেত তা হলো চাঁদের বুড়ির গল্প| যদিও সেগুলি মিথ... রোমান্স ব্যক্ত করার অন্যতম ভরসা চাঁদ কবির ভাষায় বিভিন্নভাবে বর্ণিত হয়েছে সেই পুরাকাল থেকে, যা এখনও সমান প্রাসঙ্গিক।
তবে যাদের স্বপ্ন চাঁদে গিয়ে বসবাস করার সেই স্বপ্ন পূরণ হতে আর দেরী নেই, এমনই একজন ভারতীয় হলেন রাজীভ ভি. বাগদি, একটি আয়ুর্ভেদ স্টোরের মালিক, যিনি ১৬ বছর আগে চাঁদে ৫ একর জমি কিনেছিলেন| গত সপ্তাহের সোমবার লঞ্চ করা ‘দ্বিতীয় লুনার মিশন’ সফল হওয়ার পর তিনি আশাবাদী যে এরপর চাঁদে গিয়ে থাকার তাঁর ইচ্ছা পূরণ হবে শীঘ্রই|
রাজীভ ভি. বাগদি ১৪০ ডলার দিয়ে নিউ ইয়র্ক বেসড লুনার সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল থেকে চাঁদের মেয়ার ইমব্রায়াম (সি অফ রেইনস)-এ একটি জমি কেনেন যা ২৭শে জুলাই ২০০৩ সালে লুনার রেজিস্ট্রি দ্বারা রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল|
সূত্রের খবর, তাঁর কাছে চন্দ্র প্রজাতন্ত্র (লুনার রিপাবলিক) কর্তৃক জারি হওয়া সরকারী নথী আছে, এছাড়াও চাঁদের সম্পত্তির দলিল, রেজিস্ট্রেশন, নাগরিকত্বের ঘোষণা ও মানচিত্র রয়েছে|
রাজীভ জানান, 'চন্দ্রায়ন-২' সফলভাবে লঞ্চ হওয়াতে একজন ভারতীয় হিসাবে তিনি গর্ব অনুভব করছেন| এটি মানব জাতির জন্য অনেক ভালো কিছু আনবে| তিনি আরো বলেন, যখন তিনি ইন্টারনেটে সার্ফিং করছিলেন হঠাৎ চাঁদে জমি বিক্রির একটি প্রতিবেদন পড়েন, তারপর রিসার্চ করে সেখানে জমি কেনার সিদ্ধান্ত নেন| তিনি আরো জানান, তিনি ভেবেছিলেন এই জমি কেনাটা তাঁর পরবর্তী জেনারেশনের জন্য লাভজনক হবে, কিন্তু তিনি এখন আশাবাদী যে তিনি তাঁর পরিবার নিয়ে সেখানে বাস করতে পারবেন, কারণ তিনি মনে করেন, ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে পর্যটনশিল্প শুরু হবে|
এটি একটি ব্যক্তিগত বিনিয়োগ। এটি সফল হতে পারে বা ব্যর্থও হতে পারে। তিনি এমন একটি প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগ করেছেন যা ভবিষ্যতে মানব জাতির সাহায্য করতে পারে| অন্তত আগামী প্রজন্মের মনে রাখা উচিত যে তাদের পূর্বপুরুষরা দূরদর্শী ছিল| তিনি যখন চাঁদে জায়গাটি কিনেছিলেন তখন অনেকেই তাঁকে নিয়ে উপহাস করেছিল, লোকেরা তাঁকে বোকা ও পাগল বলেছিল| এখন তিনি খুশি যে লোকেরা এবার তাঁকে নিয়ে ব্যঙ্গ করা থেকে বিরত থাকবে|
রাজীভের ভাই, ললিত মোহতাও দাদার পথ অনুসরণ করেন| শুধু রাজীভের পরিজন নয়, সারা বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ চাঁদে জমি কিনছে বলে জানান রাজীভ| অর্থাৎ এক কথায় কিছু বছরের অপেক্ষা আর তারপরেই চাঁদে বসতির গল্প সত্যি হবে বলে আশাবাদী তিনি।