মল্লভূমির সাত রত্নের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই প্রাচীন রাধামাধব মন্দির

বিষ্ণুপুরের প্রাচীন মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম হল রাধা মাধব মন্দির। রাধা গোবিন্দ মন্দিরের ঠিক বিপরীতে, এটি পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যগুলির মধ্যে একটি জনপ্রিয় স্থান এবং বিষ্ণুপুরে দেখার জন্য শীর্ষস্থানীয় স্থানগুলির মধ্যে একটি। ১৭৩৭ সালে মল্ল রাজাদের আমলে রানি চূড়ামণির নির্দেশে এই মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল। যদিও অনেকের ধারণা রাজা বীর সিংহের স্ত্রী রানী শিরামণী দেবীর নির্দেশে এই মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল। লাল পাথর দ্বারা হয়েছিল মন্দির নির্মাণের কাজ। বিষ্ণুপুরের প্রাচীন মন্দিরগুলি বরাবরই স্থাপত্য কলার জন্যে বিখ্যাত। আর এই স্থাপত্যকলার নির্দশন মিলবে রাধা মাধবের মন্দিরেও। খিলান ও স্তম্ভগুলিতে খোদাই করা রয়েছে মহাভারত, রামায়ণের বহু চরিত্র ও  কিছু প্রাণীর এবং গনেশের ছবি। মন্দিরের সামনে একটি দো চালা মন্ডপ রয়েছে যেটি মন্দিরের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি করেছে। প্রাচীন এই মন্দিরে এক সময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুজো করা হতো। বর্তমানে এই মন্দিরে কোনও দেবতার মূর্তি নেই।

বিষ্ণুপুরে মোট সাতটি এক রত্ন মন্দির রয়েছে। যার মধ্যে নাম রয়েছে রাধা মাধব মন্দিরের। অর্থাৎ মন্দিরের উপরে একটি চূড়া রয়েছে। সম্পূর্ণ মন্দিরটি বর্গাকার আয়তন বিশিষ্ট। জনপ্রিয় কালাচাঁদ মন্দিরের সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে এই মন্দিরের। তবে মন্দিরের দু পাশে তিনটি করে খিলান রয়েছে যা বিষ্ণুপুরের অন্যান্য মন্দিরগুলি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা রূপ দিয়েছে এই মন্দিরকে। ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ এই স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য ধরে রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

প্রাচীনকালে মন্দিরে অনেক অনুষ্ঠান হত। কিন্তু এখন বন্ধ থাকে মন্দিরটি। শুধুমাত্র পর্যটকদের প্রবেশের জন্যেই মন্দিরটি খোলা হয়। প্রত্যেক বছর বিভিন্ন সময় পর্যটক আসেন এখানে। কলকাতা থেকে রাধা মাধব মন্দিরের দূরত্ব মাত্র ১৪১ কিলোমিটার। তাই কলকাতা থেকে খুব সহজেই চলে আসা যায় মন্দির দর্শন করতে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...