বিচিত্র দেশ ভারত। বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন রকম রীতি-নীতি, আচার-আচরণ, সংস্কৃতি সব নিয়েই আমাদের ভারত বর্ণময় দেশ। আমাদের দেশ অবশ্যই সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। প্রচুর মন্দির রয়েছে এখানে এবং বিভিন্ন মন্দিরে বিভিন্ন আরাধ্য দেবতার পুজোর জন্য প্রয়োজন হয় বিভিন্ন রকম উপাচারের। এখানে এমন অনেক তীর্থস্থান আছে, যেখানে গেলে এবং পুজোর প্রক্রিয়া দেখলে অবাক হতে হয়। উত্তরপ্রদেশের ব্রহ্মা বাবার মন্দির এমনই একটি মন্দির।
এই মন্দিরে পুজো দিতে গেলে ঘড়ি নিয়ে যেতে হবে। দশকের পর দশক ধরে ঘড়ি দিয়েই এখানে পুজো হয়ে আসছে। স্থানীয় একজন এই গ্রামে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেটাই এখন এই মন্দিরকে বিশ্বখ্যাত করে তুলেছে। কারন এরকম ঘড়ি উৎসর্গ করে পুজো দেওয়ার রীতি পৃথিবীর আর কোনও মন্দিরে নেই।
অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে এখানে গেলে ভালোভাবে ঘোরা যাবে। বারাণসী থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরের এই মন্দিরে প্রায় এক ঘন্টাতেই পৌঁছে যাওয়া যায়। বাস পাওয়া যায় সুবিধামত। গাড়িও যায়। ট্রেনে জৌনপুর স্টেশন থেকেও যাওয়া যায়। অটোলা মসজিদ, শাহী ব্রিজ, চন্দ্রিকা দেবী ধাম, শংকর মন্দির, জামা মসজিদ প্রভৃতিও দেখে নিতে পারেন ব্রহ্মা বাবার মন্দির দর্শন করার ফাঁকে।
লোকমুখে প্রচলিত আছে, প্রায় তিরিশ বছর আগে এখানকার একজন অধিবাসী মানসিক করেছিলেন গাড়ির ড্রাইভার হওয়ার। তার সেই ইচ্ছা পূরণ হয়ে যায়। তিনি ঘড়ি দিয়ে বাবার পুজো দেন। সেই কথা গ্রামে প্রচার হয়ে যেতেই শুরু হয়ে যায় ঘড়ি দিয়ে পুজো দেওয়ার রীতি। ফুল-বেলপাতা কিছুই লাগেনা। সকলে বিশ্বাস করেন, ঘড়ি দিয়ে মানত করলে সেটা পূরণ হবে। মন্দিরে হাজার হাজার ঘড়ি রয়েছে, কিন্তু কোনও ঘড়িই কিন্তু চুরি হয়না। এমনকি মন্দির সংলগ্ন এলাকাও ঘড়িতে ছেয়ে আছে। জাতপাতের বেড়িতে বন্দি উত্তরপ্রদেশে কিন্তু এই মন্দিরে সকল জাতের মানুষের জন্যই অবারিত দ্বার। তাই এত বিখ্যাত হয়ে উঠেছে ব্রহ্মা বাবার মন্দির।