আজই সেই দীর্ঘ প্রতীক্ষার প্রহর গোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানের জন্য আজ একটা গর্বের দিন। তৃতীয়বারের জন্য চাঁদে পাড়ি দিচ্ছে ভারত অর্থাৎ ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) লঞ্চ করবে চন্দ্রযান ৩।
আজ ১৪ জুলাই ভারতীয় সময় দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে চন্দ্রযান উৎক্ষেপণ করতে চলেছে ইসরো। ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট — গাইসোক্রোনাস লঞ্চ ভেহিকেল মার্ক ৩ বয়ে নিয়ে যাবে চন্দ্রযান ৩ কে৷ শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের লঞ্চিং প্যাড থেকে উড়বে এই মহাকাশযান। আগামী ২৩ অথবা ২৪ অগস্ট চাঁদের মাটিতে ল্যান্ড করবে চন্দ্রযান ৩।
চন্দ্রযান ৩ -এ ল্যান্ডার, রোভার এবং একটি প্রোপালশন মডিউল রয়ছে৷ যার মধ্যে দিয়ে প্রোপালশন মডিউলের ওজন ২১৪৮ কেজি৷ ল্যান্ডার মডিউলটি ১৭৫২ কেজি ওজনের৷ এই মহাকাশযানটি চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশের পর প্রোপালশন মডিউল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির মধ্যে প্রবেশ করলেই তার গতি অনেকটা কমে যাবে। মহাকাশযানটি তার উচ্চতা কমিয়ে ধীরে ধীরে প্রবেশ করবে চাঁদের বৃত্তাকার কক্ষপথে। চন্দ্রযান ৩ অভিযানের জন্য প্রায় ৬১৫ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে।
চন্দ্রযান ৩ -র উৎক্ষেপণের পুরো বিষয়টি অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং ইসরো-র ইউটিউব চ্যানেলেও এই বিষয়টি লাইভে দেখা যাবে৷ পাশাপাশি ডিডি ন্যাশানাল চ্যানেলেও এই উৎক্ষেপণ লাইভ দেখা যাবে৷
সব ঠিক থাকলে ভারত সত্যিই একটা ইতিহাস গড়বে। কারণ চন্দ্রযান ৩ হতে চলেছে প্রথম মহাকাশযান যা চন্দ্রপৃষ্ঠের সাউথ পোল বা দক্ষিণ মেরুর মাটি স্পর্শ করবে। এখনও পর্যন্ত আমেরিকা, চিন এবং রাশিয়ার মহাকাশযান চাঁদে সফলভাবে নামতে পেরেছে। আজকের এই মিশনে সফল হলে চতুর্থ দেশ হিসেবে এক নতুন ইতিহাস গড়বে ভারত।
প্রাক্তন ইসরো ডিরেক্টর কে সিভান মিশন সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানিয়েছেন, “ইসরো আগের ব্যর্থতার কারণগুলিকে খুঁজে বের করেছে। সেগুলিকে সংশোধন করা হয়েছে৷ এবার ইতিহাস সৃষ্টি করতে চলেছে ইসরো। চন্দ্রযান-৩ পূর্ববর্তী মিশনের মতো একই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও এবার সাফল্য প্রায় নিশ্চিত। মহাকাশে অনেক কিছুই অজানা থেকে যায়। কিন্তু ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা নতুন আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছি। এবার অর্জিত সাফল্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মহাকাশ গবেষণায় উৎসাহিত করবে” ।
চন্দ্রযান-৩ যে কোনও উপায়ে সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রাক্তন ইসরো চেয়ারম্যান মাধবন নায়ার। তিনি বলেন, “এই মিশন মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে ভারতের জন্য একটি ‘মাইলফলক’ হিসাবে প্রমাণিত হবে। তিনি স্বীকার করেছেন যে চাঁদে ল্যান্ডারের নরম অবতরণ খুবই কঠিন এবং জটিল। তিনি বলেন, “ভারত চাঁদের কক্ষপথের তার প্রযুক্তিগত সক্ষমতা প্রমাণ করেছে, এখন তাকে তার সফট ল্যান্ডিংয়ের সক্ষমতা প্রমাণ করতে হবে। আজ যখন সারা পৃথিবী আবার চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমাদের এই মিশন সফল করতে হবে” ।