ভারতে বিশেষ করে কলকাতায় ট্রেন চালু হয়েছিল সেই উনবিংশ শতকেই| কিন্তু শুরুর দিকে ট্রেন ছিল বিলাসিতার নামান্তর| দেশ ভাগ ট্রেনের আর এক রূপ চেনালো| কাতারে কাতারে উদ্বাস্তু ট্রেনের গায়ে-মাথায় চেপে দেশ ছেড়েছিলেন এবং শিয়ালদা তথা হাওড়ার প্ল্যাটফর্মে আশ্রয় নিয়েছিলেন| যদিও বিংশ শতকে রেলের চাকরি একটি স্টেটাস সিম্বলিক চাকরি হয়ে উঠেছিল, সমগ্র দেশ জুড়ে তার ব্যাপ্তি এবং ব্যবসায়িক লভ্যাংশের কারণে, তবু বাঙালি তথা সাধারণ বাঙালি ট্রেনের প্রেমে পড়েছে সত্যজিতের পথের পাঁচালিতে ট্রেনের ব্যবহার দেখার পর থেকেই| যত দিন গেছে, ট্রেনের রূপান্তর ঘটেছে| কয়লার ইঞ্জিন থেকে ডিজেল, তারপর ইলেকট্রিক আবার ন্যারো গেজ থেকে মিটার গেজ হয়ে এখন প্রায় সমগ্র ভারতবর্ষে ব্রডগেজ লাইনেই ট্রেন চলে| তো এ-হেন ট্রেনের আবার রূপান্তর ঘটতে চলেছে|
এতদিনকার চেনা ট্রেনের কামরায় এসি থ্রি টিয়ার কোচের জানালা টানা জানালা হতে চলেছে| আপাতত এই ব্যবস্থা ৩টিয়ারে করা হলেও পরে ধাপে ধাপে সব এসি কোচেই এরকম ব্যবস্থা চালু হবে| রেলমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চেন্নাইয়ের আইসিএফ(ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি)-এ একটি এই ধরনের পরীক্ষামূলক কোচ চালু হয়েছে| যেখানে সম্পূর্ণভাবে বদলে ফেলা হয়েছে কোচের ডিজাইন| ভিন্ন ভিন্ন জানালা উঠিয়ে দিয়ে অতিরিক্ত কাচের ব্যবহার করে একটিমাত্র জানালা তৈরী করা হয়েছে| তবে ভেতরের ডিজাইনের কোনো পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছেনা| এর ফলে ট্রেনের ওই কোচগুলি দেখতে যেমন আকর্ষনীয় হবে, তেমনি কামরার ভেতর থেকে যাত্রীরা অনেক পরিষ্কারভাবে বাইরের দৃশ্য দেখতে পারবেন| সরকারী সূত্রের খবর, বেশ কয়েকদিন ধরেই ট্রেনের কোচ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে| নর্দার্ন রেলের বাছাই করা কয়েকটি ট্রেনের স্লিপার কোচের চেনা রং আমূল বদলে ফেলে সাতটি রং ব্যবহার করে কামরাগুলি সাজিয়ে তোলা হচ্ছে যাতে ট্রেনের সফর আরও আকর্ষনীয় হয়| ভারতে উচ্চগতিসম্পন্ন ট্রেন চালানো নিয়েও বিভিন্ন রকম ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে|