বিপ্লবী ভাইদের দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেবার আদর্শ ও আন্দোলন প্রীতিলতাকে সবসময় ভাবিয়ে তুলেছিল। তাই যখনই তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বই পড়েছেন তিনি আরও জেনেছেন স্বাধীনতার আসল মানে। এ হেন নারী সংগ্রামে প্রাণ দেবে এটা আশ্চর্যের কিছু নেই। বরং শেখার আছে অনেক। কিন্তু এই আঁকুতোভয় নারীর জীবনের শেষ সময় কেমন ছিল জানেন? তিনি যখনই জানলেন ভারতমাতাকে মুক্ত করতে তাকে প্রাণ দিতে হবে, জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ মায়ের জন্য একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেই চিঠিই ছিল মাকে বলা তার শেষ কথা।
অজ্ঞাতবাস থেকে বের হয়ে সম্মুখ সমরে যাবার আগে মাকে তিনি লিখেছিলেন, আর বোধহয় ফেরা হবে না তার। দেশমাতাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য নিজের প্রাণ বিসর্জন দিতে চলেছেন। অনেক পুরুষ প্রাণ দিয়েছে, এবার কন্যাদের পালা।
আসলে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য সাহসের কোন অভাব ছিল না প্রীতিলতার মনে। একজন বিধবা হয়েও সমাজের চিরাচরিত পর্দাগুলো টেনে ছিড়ে ফেলেছিলেন তিনি। জানা যায়, মাস্টারদা সূর্য সেনের শিষ্য হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে কোন ত্রুটি রাখেননি তিনি। তাই পরবর্তীকালে তার বাড়িতেই অনেক আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন সূর্য সেন। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিবাদ মিছিলের দায়িত্ব ইউরোপিয়ান ক্লাবে হানা, ইত্যাদি দায়িত্ব যত্ন সহকারে পালন করেছিলেন তিনি। সেই সাহস আগুনের মতন বুকে ছিল বলেই, পটাশিয়াম সাইনাইটের ক্যাপসুল দাঁতে চেপে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন তিনি, আর তাই দেশের মানুষের কাছে এক উদাহরণস্বরূপ হয়ে চিরকালীন জায়গা করে নিয়েছেন।