প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মার্কলে। শুরু থেকেই তাঁরা ব্রিটেনের রাজতন্ত্রের নিয়ম-কানুনের উল্টো পথে হেঁটেছেন। নিজেদের মতো করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে সাধারণ জীবনযাত্রার প্রতিই তাঁদের অটুট আস্থা ছিল। এই নিয়ে রাজপরিবারে বির্তকও কিছু কম হয়নি। মাঝে মাঝে তা সর্বসমক্ষেও এসে গেছে। কিন্তু তা সত্বেও তাঁদের দমিয়ে রাখা যায়নি। নিজেদের আদর্শে নিজেরা ছিলেন অটুট। কিন্তু এবারে যেন চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন।
বুধবার অপ্রত্যাশিতভাবে ডিউক এবং ডাচেস অফ সাক্সেস ঘোষণা করেন, সিনিয়র রয়্যাল হিসেবে তাঁরা আর গণ্য হতে চাননা। অর্থাৎ রাজ পরিবারের সঙ্গে তাঁরা আর একসঙ্গে থাকতে চাননা। রাজকোষের অর্থ ব্যবহার না করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হওয়ার চেষ্টা করবেন। স্বাভাবিকভাবেই এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজপরিবারে আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে। সূত্রের খবর, পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেগান-হ্যারি। সূত্র থেকে জানা গেছে, খবরটি শোনামাত্রই রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ রাজ পরিবারের সদস্যদের নির্দেশ দেন কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন হ্যারি এবং মেগান তার কারণ অতি সত্বর খতিয়ে দেখতে| তিনি নির্দেশ দিয়েছেন কয়েক সপ্তাহ নয়, কয়েক দিনের মধ্যেই এমন সিদ্ধান্তের কারণ খুঁজে বের করতে হবে|
এই বিষয় নিয়ে হ্যারি-মেগান জানাচ্ছেন, তাঁদের পুত্র সন্তানের সার্বিক বিকাশের কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের আরও বক্তব্য, তাঁদের পরিবার পরবর্তী পর্যায়ের জন্য ভাবনাচিন্তার অবকাশ পাবে। গত বছর জুন মাসে ডিউক এন্ড ডাচেস অফ কেমব্রিজ ফাউন্ডেশন থেকে আলাদা হয়ে সাসেক্স রয়্যাল চ্যারিটি তৈরি করেছিলেন হ্যারি-মেগান। সেই দাতব্য কর্ম আবার শুরু করবেন তাঁরা এমনটাই জানিয়েছেন। তাঁরা আফ্রিকা, আমেরিকাতেও কাজ করবেন। শুধুমাত্র ব্রিটেনের মধ্যে নিজেদের কাজ সীমাবদ্ধ রাখবেন না। জোর দেবেন নারীর ক্ষমতায়নে। তাঁরা জানিয়েছেন, কিছু সময় ব্রিটেন এবং বাকি সময় উত্তর আমেরিকায় কাটাবেন তাঁরা। তবে ব্রিটেনের রানি, কমনওয়েলথ এবং নিজেদের পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি সমস্ত রকম দায়িত্ব পালন করবেন।
এই সিদ্ধান্তের পর ম্যাডাম তুসোতে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের থেকে হ্যারি ও মেগানের মোমের মূর্তি সরিয়ে দেওয়া হয়। মেগান নিজে আমেরিকান, তাঁর মা থাকেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। কিন্তু ব্রিটিশ মিডিয়া দাবি করছে, কানাডাতেও বছরের বেশ খানিকটা সময় কাটাতে পারেন হ্যারি-মেগান। উল্লেখ্য, ছ'সপ্তাহ কানাডায় ছুটি কাটিয়ে সদ্য তাঁরা ব্রিটেনে ফিরেছেন। এই ব্যাপারে লন্ডন হাই কমিশন থেকে কানাডা প্রশাসনকে ধন্যবাদও দেওয়া হয়েছে। কানাডাতে মেগানের প্রচুর বন্ধু বান্ধব রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হওয়ার অর্থ, রাজকোষ থেকে কোনও রকম খরচ নেবেন না হ্যারি-মেগান নিজেদের জন্য। কিন্তু নিয়মানুযায়ী তাঁরা যদি মনে করেন, তাঁদের বিদেশ সফরের খরচ রাজকোষ থেকেই যাবে অথবা সিংশ্লিষ্ট দেশ সেই খরচ বহন করবে। রাজ পরিবারের সদস্য বলে মেট্রোপলিটন পুলিশের নিরাপত্তা নিতেও তাঁরা বাধ্য।