লালমাটির দেশে পৌষমেলা

পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে

আয়রে চলে আয় আয় আয়|

ডালা যে তার ভরেছে

আজ পাকা ফসলে,

মরি হায় হায় হায়

লালমাটির দেশ বোলপুর, আর বোলপুর মানেই বাঙালিদের মনে ফুটে ওঠে এক নস্ট্যালজিয়া| বোলপুর বলতেই প্রথমে যে বিষয়গুলি মনে আসে তা হলো শান্তিনিকেতন পৌষমেলা| আর শীত এসে গেলে তা যেন আরও বেশি করে মনে আসে| শান্তিনিকেতন যেতে ভালবাসেনা এমন মানুষ কিন্তু খুঁজে পাওয়া বেশ দুস্কর| সারা বছর পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে বহু মানুষ এখানে আসেন| তাদের মধ্যে অধিকাংশই হলেন অধ্যাপক, গবেষক পড়ুয়া তাছাড়াও পর্যটকদের আগমন তো রয়েছে সারাবছরই| কালের সাথে তাল মিলিয়ে বহু কিছু বদলালেও পৌষমেলা আজও তার নিজ ক্ষেত্রে অম্লান| প্রতি বছর রীতি মেনে ৭ই পৌষ এই মেলা শুরু হয়| গ্রামবাংলার সংস্কৃতির এক অঙ্গ এই মেলা| কিন্ত এই মেলার পিছনে রয়েছে এক ইতিহাস| রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত এই শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা শুরু হয় প্রায় ১২৩ বছর আগে| ১৮৯৫ সালে অর্থাৎ ১৩০২ বঙ্গাব্দের ৭ই পৌষ এই পৌষমেলার সূচনা হয়| মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের  ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হওয়ার এই দিনটি এরকম ভাবেই উদযাপন করা হয় | ৭ই পৌষ, বাংলার ১২৫০ সালে পন্ডিত রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের কাছে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন তিনি| মহর্ষি দেবেন্দ্র ঠাকুর ১২৯৮ সালে শান্তিনিকেতনে প্রতিষ্ঠা করেন একটি ব্রাহ্মমন্দির এবং ১৩০১ সাল থেকেই এই প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করার উপলক্ষ্যে শুরু হয় শান্তিনিকেতনের পৌষমেলার| সময়ের সাথে সাথে বেড়েছে এই মেলার পরিধি| শুধুই বোলপুর বা বীরভুম নয় সারা বাংলা তথা বিদেশের বহু মানুষও এসে থাকেন এই মেলায়| চিরাচরিত প্রথা মেনে প্রতি বছর ৭ই পৌষ শুরু হয় এই মেলা| সকালে সানাইয়ের সুর, বৈতালিক ছাতিমতলার প্রার্থনাসভার মাধ্যমে শুরু হয় এই মেলা| প্রতি বছর ১২০০- মতো দোকান বা স্টল বসে এই মেলায়| থাকে স্থানীয় মানুষদের জন্য মেলায় নানা স্টল দেবার নিজের শিল্প প্রদর্শনের সুবিধাও| মেলে ডোকরা, মাটি, বাঁশের নানান সামগ্রী| শহুরে ভাবধারা ধীরে ধীরে এই মেলাতে প্রভাব বিস্তার করলেও হারিয়ে যায়নি এর পুরানো ঐতিহ্য 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...