গ্রাম বলতে চোখের সামনে ভেসে ওঠে সবুজের সমারোহ, নির্মল হাওয়া আর সর্বোপরি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ। কিন্তু গুজরাতের অম্বাপুর গ্রামের দৃশ্য কিছুদিন আগে অব্দি ছিল সাধারণ ধারণার ঠিক বিপরীত। স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, প্রকাশ্যে পরিচ্ছনতা, আবর্জনা নিস্পত্তি এবং পুনর্ব্যবহার সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকার ফলে এ গ্রামের আবর্জনা নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। তবে সুস্থ জীবন যাপনের প্রচেষ্টা আর ইচ্ছা মাত্র আট মাসেই ফিরিয়ে দিয়েছে গুজরাত, গাঁধীনগর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অম্বাপুর গ্রামের স্বাভাবিক চালচিত্র।
সম্মিলিত উদ্যোগে অম্বাপুর গ্রামকে আবর্জনাহীন করে তোলার উদ্যোগ দৃষ্টান্তমূলক। প্রায় ৫০০ পরিবারের বসবাস গুজরাতের এই গ্রামে। কিন্তু তাদের আবর্জনা ফেলে দেবার জন্য ছিলনা কোন নির্দিষ্ট স্থান। যে যার ইচ্ছে মত বাড়ির পাশেই যে কোন জায়গা বেছে নিত আবর্জনা ফেলবার জন্য। এর প্রভাবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের শিকার হচ্ছিল গ্রামের শিশু থেকে বড়রাও। সম্প্রতি এই গ্রামে এসে এমন পরিস্থিতি লক্ষ্য করে গাঁধীনগরের এলডিআরপি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এবং রিসার্চ এর শিক্ষার্থীরা। তারাই প্রথম উদ্যোগ নেয় গ্রামবাসীকে আবর্জনা পরিস্কারে সচেতন করার। গ্রামবাসীরা পড়ুয়াদের উদ্যোগ সম্পর্কে জেনে সাহায্য করতে নিজেরাও উদ্যোগী হয়।
মুম্বাইয়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় এই উদ্যোগে। গ্রামের বাড়ি প্রতি দুটো করে প্লাস্টিক ডাস্টবিন প্রদান করা হয় যার একটিতে প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য অন্যটিতে বায়োডিগ্রেডবল বর্জ্য রাখবার জন্য বলা হয় স্থানীয়দের। নির্দিষ্ট সময়ে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের সাথে কথা বলে সাফাইকর্মীরও ব্যবস্থা করা হয়। বর্জ্য থেকে সার তৈরী করবার জন্য দেওয়া হয় প্রশিক্ষণ। আবর্জনার পুনর্ব্যবহারে উপকার পেয়েছেন স্থানীয় কৃষকরাও। আবর্জনা থেকে তৈরী সার তারা ব্যবহার করছেন কৃষি ফলনে। সার্বিক প্রচেষ্টায় মাত্র ৮ মাসেই আবর্জনা মুক্ত হয়ে ওঠে গুজরাটের অম্বাপুর গ্রামটি।