গঙ্গা দূষণমুক্ত

পরিবেশ কে দূষণ মুক্ত করার পরিকল্পনা বহুদিন ধরে চলছে। সেই জন্য নানান নতুন ধরণের পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে। তবে দূষণের জেরে সাধারণ মানুষের জীবন ও গঙ্গার জল কতখানি বিপদগ্রস্ত? তার অনুসন্ধানে জুলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া এনভায়রনমেন্টাল ডিএনএ অর্থাৎ গঙ্গার জল, মাটিজীব জগতের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা শুরু করেদিয়েছে। গঙ্গোত্রী থেকে নদীর মোহনা পর্যন্ত দীর্ঘ ২৫২৫ কিলোমিটার জুড়ে বহমান গঙ্গার ২০০টি এলাকা চিহ্নিত করে এই নমুনা সংগ্রহ ও গাঙ্গেয় জীবজগৎ নিরীক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী অগস্ট মাসে সমীক্ষকদের প্রথম দফার রিপোর্ট পেশ করার কথা বলে জানা গিয়েছে। উক্ত বিষয়ে জুলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অধিকর্তা কৈলাস চন্দ্র বলেন, নিকাশি জলের সঙ্গে সঙ্গে  গঙ্গা দূষণের অন্যতম আরও বিশেষ কারণ প্লাস্টিক। বিশেষ করে মাইক্রো প্লাস্টিক। যা দূষিত করছে সমুদ্রকে, তাছাড়া মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর জন্য এই প্লাস্টিক সঙ্কট তৈরি করছে

     তবে এই দূষণের জেরে গঙ্গার অভ্যন্তরীন প্রাণী ও উদ্ভিদ জগতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। মাটিতেও এই পরিবর্তন বেশ চোখে পড়ছে। বহু জলের প্রাণী যেমন ধরুন, ডলফিন, শুশুক, কচ্ছপ, বিভিন্ন মাছের অস্তিত্ব বিপন্ন। জানা গিয়েছে যে, গঙ্গা দূষণ মাত্রার সঙ্গে মোকাবিলায় হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হলেও তা এখনও কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারেনি। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সর্বশেষ রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে, উত্তরপ্রদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত গঙ্গার বিস্তীর্ণ পথে নিকাশি জল ফেলার আগে ট্রিটমেন্ট করার ব্যবস্থা হলেও তা ফলপ্রসূ ভূমিকা নিতে পারেনি। ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসলেও তা পুরো মাত্রায় কাজ করে না, এমন নজির বিরল নয়। ফলে নিকাশি জলের একটা বড় অংশ শোধন না-করে গঙ্গায় ফেলা হচ্ছে। যা জলে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতি ১০০ মিলি লিটারে এই ব্যাকটেরিয়া সর্বোচ্চ এক হাজার থাকলে তা নিরাপদ, সেখানে তার পরিমাণ রয়েছে এক লক্ষ ষাট হাজার। ২০০ টি এলাকায় গঙ্গা কতটা দূষিত? এই দূষণের কারণ কী? ইত্যাদি নানা প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে এনভায়রনমেন্টাল ডিএনএ পরীক্ষার  মাধ্যমে। অন্যান্য মাপকাঠি দিয়ে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় গঙ্গা দূষণের সঠিক মাত্রা। তাই দূষণের সঠিক মান যাচাই করতে এই বিশেষ পরীক্ষার বেশ প্রয়োজন। তাছাড়া বহু জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে, যেগুলো স্বাভাবিক নিয়মে দূষণকে নিয়ন্ত্রণ করে। সেই জীব ও উদ্ভিদকূল কতটা নিরাপদ এবং সক্রিয় রয়েছে, তাও পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে বলে জানা জায়। যার জন্য জুলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া 'নমামি গঙ্গে মিশন' প্রকল্পের আওতায় এই সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে।

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...