ধর্মীয় উত্সবের খরচ বাঁচিয়ে স্কুলের জন্য টাকা জমাচ্ছে পোখরি গ্রাম| যেদেশে ধর্মীয় উত্সবের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা জলের মত খরচ করাই রীতি, দেখানে সম্পূর্ণ স্রোতের বিপরীত দিকে হাঁটছে মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদ জেলার এই প্রত্যন্ত গ্রামটি | ধর্মীয় ক্রিয়াকলাপের জন্য যে খরচ হয় তা দিয়ে জেলা পরিষদ বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য অর্থ ব্যয় করার জন্য গ্রামবাসীর এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন বলে খবর|
যেকোনো পুজো বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রচুর পরিমাণে ফল, ঘি, মধু, দুধ এবং শুকনো ফল ব্যবহার করা হয় |পুজোর শেষে সেগুলো আর কোনো কাজেই লাগে না| তাই পোখরীর গ্রামবাসীরা ঠিক করেছে পুজোপাঠের আচার অনুষ্ঠানের খরচ কমিয়ে সেই টাকা স্কুলের কাজে লাগানো হবে | জেনে নেওয়া যাক কীভাবে স্কুলটিকে উন্নত করার পরিকল্পনা করেছে গ্রামবাসীরা ?
জেলা পরিষদের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার পবনীত কৌর গত মাসে সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, জেলা পরিষদের স্কুল ক্যাম্পাসটি বর্তমানে ২০০০০ বর্গফুট (প্রায় ০.৪৫ একর) জমিতে অবস্থিত| গ্রামবাসীরা ইতিমধ্যেই অঙ্গনওয়াড়ি এবং বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাবের উন্নতির জন্য ১০ লক্ষ টাকা খরচ করেছে| মাত্র ৫০০০০ হাজার টাকা পঞ্চায়েত থেকে অনুদান মিলেছিল| গ্রামবাসীরা স্কুলটিকে আন্তর্জাতিক মানের উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে | তাই পোখরি গ্রামে অবস্থিত স্কুল ক্যাম্পাসটি সম্প্রসারণের জন্য ২ একর জমি কেনার পরিকল্পনা রয়েছে। এই জমির জন্য চাই অর্থ | জমির জন্য প্রাথমিক অর্থের যোগান মিটলেও বাকি টাকা না দেওয়া পর্যন্ত জমি পুরোপুরি হস্তান্তর করবেন না জমির মালিক|
পোখরির বাসিন্দারা জানাচ্ছেন তিনমাস আগে থেকেই তাঁরা স্কুলের জন্য তহবিল তৈরী করছেন | সামনেই তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ভাগবতের জন্য যে খরচ ধরা হয়েছিল তা থেকে টাকা বাঁচিয়ে স্কুল ফান্ড-এ জমা করা হবে | অনুষ্ঠানের খাওয়ার খরচ কমাতে একসঙ্গে রান্না করা হবে | এবং প্রত্যেক বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসা হবে |গ্রামে ৪৫০ টি বাড়ি রয়েছে। প্রতিটি বাড়ি থেকে স্কুলের জন্য সর্বনিম্ন ৫০০০ টাকার অনুদান নেওয়া হবে | ৫ একরের বেশি জমির মালিক যারা তাদের থেকে একর প্রতি ১০০০ টাকা করে অনুদান নেওয়া হবে বলে গ্রামবাসীদের সিদ্ধান্ত | বর্তমান স্কুলটিতে ২৪০ জন পড়ুয়া আছে | আশেপাশের গ্রাম থেকেও ছাত্রছাত্রী ভর্তি করার চিন্তা ভাবনাও আছে গ্রামবাসীদের |