জনসংখ্যা বিশ্বের দরবারে একপ্রকার বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক দেশে জন্মহার নিয়ন্ত্রণের কোঠর আইনও চালু রয়েছে। সেদিক দিয়ে বিচার করলে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট এই দেশের জনসংখ্যা সত্যিই চমকে দেওয়ার মতো। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে আগ্নেয় শিলা দিয়ে তৈরি চারটি দ্বীপ- পিটকার্ন, হেন্ডারসন, ডুসি এবং ওয়েনো নিয়ে গঠিত এই দেশ। নাম পিটকার্ন আইল্যান্ডস। একমাত্র পিটকার্নেই রয়েছে মানুষের বসবাস। বাকি তিনটি দ্বীপ সমুদ্রের মাঝে জনশূণ্য হয়ে পড়ে রয়েছে।
দ্বীপবেষ্টিত এই দেশের জনসংখ্যাও হাতেগোনা, মাত্র ৫৬ জন। জনসংখ্যার বিচারে এটিই বিশ্বের কনিষ্ঠতম দেশ। পিটকার্নের সবচেয়ে কাছে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। তাই পিটকার্নের যাবতীয় চিঠিপত্র(সেখানকার একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম) পৌঁছায় নিউজিল্যান্ড হয়েই।
১৭৯০ সালে পিটকার্নে জনবসতি গড়ে ওঠে। শোনা যায়, ১৭৮৯ সালে ব্রিটিশ নৌসেনার এক দল সেনা বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। ব্রিটিশ নৌসেনার তাহিতিগামী জাহাজের ক্যাপ্টেনকে জাহাজ থেকে ছোট নৌকায় জোর করে চড়িয়ে দিয়ে জাহাজের দখল নেয় তারা। পরে তাহিতি পৌঁছায় ওই বিদ্রোহী নৌসেনারা। কিন্তু সেখানেও তাদের বেশি দিন থাকা হয়নি। ব্রিটিশ প্রশাসনের শাস্তির হাত থেকে বাঁচতে তাহিতি ছেড়ে তারা সকলে পিটকার্ন চলে যান।
এই সময় ওই বিদ্রোহী ব্রিটিশ নৌসেনাদের সঙ্গে তাহিতির কিছু মানুষও পিটকার্ন চলে যান। আশ্রয় নেন ছোট্ট এই দ্বীপে। আর তখন থেকেই এখানে জনবসতির সূত্রপাত। সে সময়ের ওই বিদ্রোহী ব্রিটিশ নৌসেনা আর তাদের সঙ্গী তাহিতির বাসিন্দাদের বংশধররাই আজ পিটকার্নের নাগরিক।
এখন যে ক’জন মানুষ পিটকার্নে রয়েছেন, তাঁরা মূলত চারটি পরিবারের সদস্য। পাহাড়, জঙ্গল আর সমুদ্রে ঘেরা অপূর্ব প্রাকৃতিক শোভা নিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে মাঝে ভেসে রয়েছে এই দেশ। ২০১০ সালে পিটকার্নের জনসংখ্যা ছিল ৪৫। ২০১৩ সালে জনগনণা করে দেখা যায় তা সামান্য বেড়ে হয়েছে ৫৬। জাতিসংঘ পিটকার্ন আইল্যান্ডসকে স্বশাসিত রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়নি। তাই আপাতত এই দেশের প্রশাসনিক দায়িত্ব রয়েছে ব্রিটেনের উপরেই।