রাস্তায় বেরতে হাজার এক বাধা। ধর্ম আর পুরুষতন্ত্রের হাজার এক ঘেরাটোপ পার হয়ে আলো ঢোকা মুশকিল। কাবুলের মহিলাদের জীবন আসলে কঠিন লড়ায়ের জীবন। তবু সেই আলো আনার লড়াইতে সামিল হন কেউ কেউ। কেউ হেরে যান আর কেউ বাধা ডিঙিয়ে পথ দেখান অন্যকে। যেমন পারিসা হায়দারি।
৩৬ বছর বয়সী পারিসা একসময় রূপ বিশেষজ্ঞা হিসেবে কাজ করতেন। তারপর যোগ দিয়েছিলেন টেলিভিশনের দুনিয়াতে। কিন্তু গ্ল্যামারের দুনিয়ার টান ছেড়ে একসময় বেছে নিলেন সম্পূর্ণ অন্য এক পেশা। তার জন্য প্রিয় অনেক কিছু ছাড়তে হল পারিসাকে। পেনসিল হিল বড় প্রিয় ছিল পারিসা। কিন্তু এককথায় ছেড়ে দেন। পেশার প্রয়োজনে।
কাবুল শহর পারিসাকে এখন একডাকে চেনে। শহরের রাস্তায় বাস চালান পারিসা। ১০ সিটের মিনি বাস ‘পিংক শাটল’। তাঁর বাসের যাত্রীরাও সব মহিলা।
পারিসার কথায় শুরুর দিকে তাঁকে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। কাবুল যানজটের শহর। তার মধ্যে ইচ্ছে করে অন্য বাসের ড্রাইভাররা তাঁর রাস্তা ‘ব্লক’ করত। রাস্তা ফাঁকা থাকলেও তারা গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখত, যাতে না তিনি যেতে পারেন।
পারিসা বলেন, ' বাস চালকের পেশা তিনি ভীষণ উপভোগ করেন।'
রাস্তায় মেয়েদের সবচেয়ে উদ্বেগ থাকে নিরাপত্তা নিয়ে। তিনি স্বস্তি পান এই ভেবে যে তাঁর জন্য অনেক মহিলাই আজ রাস্তায় বেরবার কথা ভাবতে পারছে।
পিংক শাটল কাবুলের একটি পাইলট বাস পরিষেবা। কাবুলের মহিলা এবং শিশুদের জন্য এই পরিষেবা চালু হয়েছে। বাসগুলোর চালকেরাও সবাই মহিলা।
আফগানিস্তানে পরিবহনসংকটের কারণে মহিলাদের প্রায়ই হয়রানির শিকার হতে হয়। সেই সমস্যা সমাধানের জন্য এই পরিষেবা শুরু করেছে আফগান প্রশাসন।
পিংক শাটল প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক বলেন, ‘ মহিলাদের জন্য পরিবহনের সমস্যা আমাদের দেশে রয়েছে। বিশেষ করে, কাবুলে মহিলাদের জন্য পরিবহন নেই বললেই চলে।’
কাবুল এবং আফগানিস্তানে ক্রমশ বাড়ছে মহিলা বাস ড্রাইভারদের সংখ্যা। প্রথম ৬ মাসেই ২৭৫ টি লাইসেন্সের আবেদন জমা পড়েছিল।