আকাশে ওড়া সকলের স্বপ্ন হতে পারে। কিন্তু একজন নারী হিসেবে সমাজ কোথাও কি তাদের পায়ে বেড়ি পরিয়ে রাখে না? আজও সমাজের ঘেরাটোপে পড়ে নারীদের স্বপ্ন কোথাও যেন হারিয়ে যায়। কিন্তু যারা সমাজের বেড়াজাল কাটিয়ে আকাশে উড়তে পারে তারাই প্রকৃত নারী বলে পরিচিত হয়। সমাজের অন্য নারীদফের কাছে প্রতীক হয়ে থেকে যায় তারা। কল্পনা চাওলা একদিন সমাজের তোয়াক্কা না করেই পাড়ি দিয়েছিলেন মহাকাশে। তাঁর এই অমর কীর্তির জন্য আজও মহাকাশবিজ্ঞানের জগতে তাঁর নাম উচ্চারিত হয় সম্মানের সাথে। সম্প্রতি এরকমই এক নারীশক্তির জয়গান দেখলো গোটা পৃথিবী।
Just flew from LAX to ATL on Delta piloted by this mother daughter flight crew. Great flight. Inspiring for you women. pic.twitter.com/4Gk1vHCcZ1
— John R. Watret (@ERAUWatret) March 17, 2019
সম্প্রতি এমব্রি-রিডল বৈমানিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ড: জন ওয়ার্টরেট সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে একটি টুইট করেন। সেই টুইটে দেখা যায়, বিমানচালকের ভূমিকা রয়েছেন দুজন নারী। সম্পর্কে তারা আবার মা ও মেয়ে। মধ্যগগনে মা ও মেয়ের এই যুগলবন্ধী মুগ্ধ করেছে তাঁকেও। জানা গেছে, লস অ্যাঞ্জেলস থেকে অ্যাটলান্টা পর্যন্ত ডেল্টা ফ্লাইটে করে ৩৫,০০০ ফিট উচ্চতা পর্যন্ত গেছিলেন এই মা মেয়ের জুটি। এই দুজন মহিলা হলেন যথাক্রমে ক্যাপ্টেন ওয়েন্ডি রেক্সন এবং ফার্স্ট অফিসার কেলি রেক্সন। বিমানে এনাদের দেখেই ওয়ার্টরেট এনাদের ফটো তুলে রাখেন। এরোপ্লেন ল্যান্ড করার পরেই তিনি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে টুইটটি করেন। টুইটটি করার সাথে সাথেই প্রায় ৪০,০০০ মানুষ এই পোস্টটি পছন্দ করেন অর্থাৎ লাইক করেন এবং প্রায় ১৬,০০০ মানুষ এই টুইটটি রিটুইট অর্থাৎ পুনরায় টুইট করেন। ওয়ার্টরেট জানান, তিনি খবর নিয়ে জেনেছেন, কেলি রেক্সনের বোনও একজন পাইলট। ওয়াট্রেটের এই টুইটটির পরিপ্রেক্ষিতে ডেল্টা টুইট করে, "ফ্যামিলি ফ্লাইট ক্রিউ গোলস"।
Excited to share the story behind meeting the mother/daughter commercial pilot team on @Delta. #FlightCrewGoals #Aviation #DeltaAirlines #PilotLife https://t.co/5cSBx9p07d
— John R. Watret (@ERAUWatret) March 21, 2019
ওয়ার্টরেট জানান, বিমানে ওঠার পর থেকেই তিনি কানাঘুসো শুনছিলেন, সবাই ককপিটের দিকটি দেখার চেষ্টা করছেন। বিমানসেবিকাদের কাছে সকলে অনুরোধও করছেন তাঁদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য। বিমানসেবিকারা সেই ব্যাপারে সাহায্য করবে জানালে শান্ত হন তারা। ওয়ার্টরেট বলেন, তিনি দেখেন যারাই পাইলটের ঘরের দিকে যাচ্ছেন তারাই বলাবলি করছেন "মা ও মেয়ে"র কথা। প্রথমে তিনি ঘটনাটি বুঝতে পারেননি। কিন্তু তিনি যখন দেখলেন তখন আর চোখকে অবিশ্বাস করার কোনো জায়গাই ছিল না। জানা গেছে, এতদিন এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতে যে মহিলারা কর্মরত ছিলেন তাদের মধ্যে ২২ শতাংশ হলো নন পাইলট এয়ারম্যান। ওয়ার্টরেট জানান, এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতে আরও ডিভার্সিটি আসলে উপকার হবে। অন্যদিকে এফএএ-র তথ্য থেকে জানা গেছে, ২০০৪ সালের পর থেকে এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতে নারীদের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। বিমান পরিচালনার কাজে যেইভাবে নারীরা এগিয়ে আসছে সেইদিক থেকে দেখলে ভবিষ্যতে এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতেও নারীশক্তির জয়গান হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।