বুক ফেয়ারে ফিলোসফি!

আজ, হ্যাঁ আজই, তিন নম্বর গেট দিয়ে বইমেলায় যেই না ঢুকেছি, অমনি আমাদের পাড়ার ডাকসাইটে ‘ফিলোসফার’ নটেদার সঙ্গে দেখা, ‘আরে, নটেদা যে!’

‘ভাবলুম যাই, দেখেই আসি কনের বাড়ির টেনশনটা আজ কোন লেভেলে!’  

‘কনের বাড়ির টেনশন মানে?’

‘ও তুই বুঝবি না।’ এড়িয়ে যেতে গিয়েও থেমে যায় নটেদা। তারপর যেন খানিক ক্ষমাঘেন্না করেই বলে, ‘ধর, লগ্ন শুরু হয়ে গেছে, কিন্তু কনে এখনও রেডি হয়নি। তখন কনের বাবার কি অবস্থা হয়? বিপি হাই হয়, তাই তো?’

‘হ্যাঁ, হয় তো।’

‘টেনশনে কনের বাবা দু’মিনিট পর পর ‘কই গো তোমাদের হল!’ বলে হেঁকে ডেকে মেয়েকে সাত তাড়াতাড়ি ছাদনাতলায় পাঠানোর জন্য বেজায় তাড়া দিতে থাকেন। তাই তো?’

‘হ্যাঁ, তাই। তো?’

‘তো, সেই তাড়াটাই হরবখত এখন প্রকাশক আর দপ্তরীর মধ্যে চলছে ওভারফোনে-আসাযাওয়ায়। বইমেলা তো শুরু, দেখ গে, অনেক বই হয়তো এখনও রেডিই হয়নি; দপ্তরখানায় সুতো-আঠা-পুস্তুনি-রঙিনকভার জড়িয়ে কনের সাজ চলছে। সে-সব বই ছাদনাতলায়, মানে বইমেলায় না আনতে পারলে পাঠকের সঙ্গে তার শুভদৃষ্টি হবে কেমন করে! দেখা হলে, মনে মনে মিললে, তবেই না পাঠকপ্রবর দেনমোহর দিয়ে তাকে ঘরে তুলবে। এবার টেনশনটা কোথায় বুঝলে চাঁদ?’ কথাটা শেষ করেই ভিড়ের ভেতর হন হন করে নটেদা গন। 

আমায় তখন বোবায় ধরেছে। ভাবছিলাম, ‘বই’ আর ‘বউ’ মিলিয়ে যে প্রবচনটা বাংলায় চলে, সেটা কপচেই কি নটেদা থিয়োরিখানা ঝেড়ে গেল? কে জানে বাবা!

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...