জলবায়ুর সংকট যত বাড়ছে তত বিঘ্নিত হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তা। হারিয়ে যাচ্ছে অনেক সবজি এবং শস্য। বদলে যাচ্ছে তাদের আকার, স্বাদ, গন্ধ, বর্ণ। সারা বিশ্বেই ছবিটা একই। সেই জায়গায় দাঁড়িয়েই অন্য ভাবনা শুরু করল পেরু।
পেরুর কাসকোতে ৯০ স্কোয়ার কিমি জায়গা নিয়ে বিজ্ঞানীরা একটি ‘লাইভ মিউজিয়াম’ এর গড়ে তুলেছেন।
সমুদ্র সমতল থেকে সতেরো হাজার ফিট উচ্চতা বিশিষ্ট। শুধু মাত্র আলুর জন্য এই পার্ক মিউজিয়াম। ১৩৬৭ রকমের আলু আছে এই পার্কে। যেভাবে বিবর্তিত হচ্ছে আলু তার প্রতিটি বদল ধরে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। সঙ্গে আলুর বীজ সংরক্ষনও করা হচ্ছে পুরোদমে।
পার্ক মিউজিয়ামের সঙ্গে যুক্ত গবেষকদের মতে জলবায়ু বদলের সঙ্গে সঙ্গে হেরফের ঘটছে চেনা এই সবজির।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের পুরোপুরি নির্ভর করতে হচ্ছে কৃষকদের ওপর। বিজ্ঞানীরা মাটির চরিত্রে বদল এবং বীজ সংরক্ষনের পথ যেভাবে এখন খুঁজতে শুরু করেছেন বছরের পর বছর ধরে কৃষকরা সেই কাজই করে চলেছে।
মঙ্গলের মাটিতে আলুর চাষ সম্ভব কী তা পরীক্ষা করে দেখেছেন নাসা এবং পেরুর ইন্টারন্যাশনাল পটাটো সেন্টারের গবেষকরা।
লাল, কমলা, হলুদ, মেরুন নীল, বেগুনি, সবুজ সব রকম রঙের আলু দেখা যায় পেরু। আলাদাভাবে রং করা নয়। এসবই স্বাভাবিক প্রাকৃতিক বর্ণ। প্রায় ৪,৬০০ রকমের আলু পাওয়া যায়। ছোট সাইজের রঙিন আলুকে বলা হয় ‘ওলু’। বর্ণ ভেদে আলুর নামও আলাদা। সাধারণ আলুর চেয়ে স্বাদ বেশ মিষ্টি। তবে স্বাদেও পার্থক্য দেখা যায়।
আলুর খোসাও বৈচিত্রময়। কারুরু মোমের মত মসৃণ তো কারুর ধুলো-ধুলো।
তবে আলুর বৈচিত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জলবায়ুর কারণে।
আজ থেকে প্রায় ৭ থেকে ১০ হাজার বছর আগে, পেরুর উরুবামবা নদীর তীরে ইনকা উপত্যকায় মানুষ শুরু করেছিল আলুর চাষ।! স্প্যানিশদের মাধ্যমে এই আলু ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে।
ইন্টারন্যাশনাল পটাটো সেন্টার এশিয়া এবং আফ্রকাতেও আলুর বিবর্তন নিয়ে কাজ করছে। চীন বিশ্বের সব চেয়ে বড় আলু উৎপাদক দেশ। কিন্তু জমি এবং জলের সমস্যায়
মাটি এবং জলবায়ু চরিত্র বদলের কারনে বিশ্বের প্রটিটি দেশই কোন না কোনওভাবে এই সমস্যায় ভুগছে। চীনের উৎপাদন কমছে। পেরুর এই ছোট্ট পার্ক মিউজিয়ামটি তে যেভাবে আলুর বীজ সংরক্ষণ করা হচ্ছে তা পথ দেখাতে পারে বাকি বিশ্বকে।