দেওয়ালির আগে ব্যক্তিগত আয়করেও সুরাহা দেওয়ার কথা ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৭ সালে ডিরেক্ট ট্যাক্স কোডের পরিমার্জন করার জন্য একটি টাস্ক ফোর্স গঠিত হয়েছিল। গত ১৯ আগস্ট অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে ওই টাস্কফোর্স সেই রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এই ডিরেক্ট ট্যাক্স কোডের সুপারিশগুলো নিয়ে অর্থমন্ত্রকে বেশ কিছুদিন থেকেই আলোচনা চলছে। সেই পর্যালোচনার ওপর ভিত্তি করেই আশা করা হচ্ছে, ব্যক্তিগত আয়করে কিছুটা হলেও ছাড় পাওয়া যাবে।
আর্থিক মন্দার অন্যতম কারণ একদিকে যেমন শিল্পস্থাপন ও লগ্নি না হওয়া, তেমনিই শহর-গ্রামের মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তের ক্রয় প্রবণতা অনেক কমে যাওয়াও এই আর্থিক মন্দার অন্যতম কারণ। সেই কারণেই অটোমোবাইল সহ অন্যান্য সেক্টর প্রচুর লোকসানের মধ্যে দিয়ে চলেছে। মনে করা হচ্ছে, মানুষ আরও বেশি করে অর্থ সঞ্চয়ের দিকে ঝুঁকছে বলেই ভোগ্যবস্তু কেনার দিক থেকে মন সরে এসেছে। কর্মসংস্থানের সংকট এবং আয়ের নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চয়তার মনোভাব থেকেই মানুষের মধ্যে বেশি করে সঞ্চয় করার মানসিকতা আরও বাড়াচ্ছে বলেই মনে করছে অর্থনৈতিক মহল। এগুলি পর্যালোচনার পর কেন্দ্রের অর্থনৈতিক মন্ত্রক চাইছে, সাধারণ মানুষকে ব্যক্তিগত আয়করে ছাড় দিয়ে নিজস্ব সঞ্চয় যাতে বজায় থাকে, সেই দিকে নিশ্চিত করা। তাহলে মানুষ নির্ভাবনায় ক্রয়মুখী হবে। সরকারি স্তরে কোনও ঘোষণা না হলেও এই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।
মোট দু'টি প্রস্তাব নিয়ে চর্চা হচ্ছে। প্রথমত সরকার ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে আয়কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করতে পারে। ১০ লাখ টাকার বেশি আয়ের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে আয়কর ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হতে পারে। দ্বিতীয়টি হল, ১০ লাখ টাকার বেশি আয় হলেই সরাসরি ৩০ শতাংশ আয়কর দেওয়ার এই নীতিতে অনেক বেশি চাপ পড়ে চাকরিজীবীদের ওপর। তাই এক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। আর্থিক মন্দা, কর্মসংস্থানের সংকট, কর্মী সংকোচনের ভ্রুকুটির ফলে জীবিকা ক্ষেত্রে যথেষ্ট আশঙ্কার পরিবেশ তৈরী হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগে কৃষকদের জমির পরিমানের ওপর সহায়তা দেওয়ার মধ্যেই সরকারি সাহায্য সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর সব কৃষকদের ৬ হাজার টাকা বার্ষিক সহায়তা প্রকল্পে আনার জন্য উদ্যোগী হয়েছে। কর্পোরেট মহলেও কেন্দ্র করছাড়ের সুবিধা দিয়েছে, এর পর চাকুরীজীবি সাধারণ মানুষকেও যদি নিজস্ব করের ছাড় ঘোষণা করে, তাহলে কিছুটা হলেও যে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক নীতির উন্নয়নের সদিচ্ছার মনোভাব প্রকাশ পাবে, তা বলাই বাহুল্য।