ঘুমাতে কার না ভালো লাগে বলুন? কিন্তু কেউ যদি একেবারে চারদিন পরে ঘুম থেকে ওঠে তাহলে কি হবে? না, কেউ যদি ঘুমের ওষুধ খেয়েও ঘুমায় তাহলেও চারদিন টানা ঘুমানো সম্ভব নয়। কিন্তু এমনটাই ঘটেছে একটি গ্রামে।সেখানে মানুষ আবার যখন তখন ঘুমিয়ে পড়ছে।কাজ করতে করতেও মানুষ ঘুমিয়ে পড়ছে। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেও ঘুমিয়ে পড়ছে মানুষ।২০১৩ সাল থেকে শুরু হয়েছে এই অদ্ভুত ঘুমের খেলা। কেন কি কারণে এইরকম ঘুমের শিকার সেই গ্রামের মানুষ তা এখনো জানা যায়নি। কাজাখস্তানের এজিল জেলার অন্তর্গত একটি গ্রাম হলো 'কালাচি'।সেই গ্রামেই দেখা গিয়েছে এই অদ্ভুত রোগ। নারীপুরুষ নির্বিশেষে এই রোগের কবলে পড়ছেন সকলে। কিন্তু কি এই রোগ? ঘুমিয়ে পড়া মানুষজন আবার জানাচ্ছে, ঘুম থেকে ওঠার পর উল্টো বিক্রিয়া ঘটছে। কোনো কোনো শিশু আবার ঘুম থেকে ওঠার পর দেখছে তার মায়ের মুখে হাতির মতো শুঁড় গজিয়েছে। অনেকের আবার এই ঘুম থেকে ওঠার পর স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।এর পাশাপাশি হ্যালুসিনেশনের ঘটনা তো রয়েইছে।মাথা ব্যথা, বমিভাব এইসব উপসর্গ দেখা দিচ্ছে ঘুম থেকে ওঠার পর। কিন্তু কেন?
প্রথমে এই রোগের শিকার হন লিউভক বেলকোভা। তিনি বাজার করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েন। তারপর তাকে হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া হলে ৪ দিন পরে তিনি ঘুম থেকে ওঠেন। চিকিৎসকেরা যদিও জানান তার স্ট্রোক হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু এরপর গ্রামের অনেক মানুষেরই এমনটা শুরু হওয়াতে সন্দেহ বাড়ে। এর পরেও সেই গ্রামের ভিক্তর নামক এক ব্যক্তি বাইক নিয়ে কাজে বেরিয়েছিলেন। তিনিও রাস্তাতেই ঘুমিয়ে পড়েন। তাকে রাস্তায় শুয়ে ঘুমাতে দেখে লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর দেখা যায় কালাচিরই একটি স্কুলে ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুক্ষন পরেই শিক্ষক থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রী সকলকেই ঘুমাতে দেখা যায়। ২০১৩ সালেই প্রায় ১২০ জন এই অদ্ভুত ঘুমের শিকার হয়েছিলেন। এর পর ধীরে ধীরে এই রোগটি ছড়িয়ে পড়তে থাকে গ্রামের কোনায় কোনায়।
এই অদ্ভুত ঘুমের কারণ জানার জন্য সেই গ্রামের মাটি থেকে শুরু করে জল সবকিছুরই পরীক্ষা করা হয়। এর সাথে সাথে অস্বাভাবিকভাবে ঘুমিয়ে পড়া মানুষদের স্বাস্থ্যের নানা পরীক্ষা করা হয়। রেডিওলজি থেকে শুরু করে টক্সিকোলজি বাদ যায়না কোনো পরীক্ষাই। তার পরেও খোঁজ মেলে না কারণের। গ্রামবাসীদের ব্রেনের স্ক্যান করে দেখা যায় বেশ কিছু পরিমান তরল জমা হয়েছে তাদের ব্রেনে। একে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ইডিমা। কিন্তু কি কারণে হয়েছে এই ইডিমা তা নিয়েও ধন্ধে রয়েছে চিকিৎসকগন।
চিকিৎসকগন এর কিনারা না করতে পারলেও গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, তাদের সন্দেহের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে কিছুদূরে অবস্থিত একটি ইউরেনিয়াম খনি। এই গ্রামের পাশের গ্রামে একসময় বাস করতো খনিশ্রমিকরা। জানা যায়, এই গ্রামও একদিন ঘুমের গ্রাসে চলে যায়।১৯৯০ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া সেই খনি এলাকার বিকিরণ মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা যায় তা এখনো বিপদসীমা অতিক্রম করেনি।বৈজ্ঞানিকরা জানান, রেডিয়েশনের ফলেও এরকম হওয়ার কথা নয়। রেডিয়েশনের মাত্রা বেশি হলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিকৃতি ঘটতে পারে। এছাড়াও ক্যান্সারের মতো মরণ রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। কিন্তু ঘুমিয়ে পড়ার কোনো কারণ রেডিয়েশনের সাইড এফেক্ট হতে পারেনা।বৈজ্ঞানিক কোনো কারণ না মেলায় গ্রামের বাসিন্দারা বিশ্বাস করতে শুরু করে এমন জিনিস হয়তো কোনো ভিনগ্রহের বাসিন্দাদের উপস্থিতির কারণে হয়েছে।
কিন্তু ২০১৫ সালে এই নিয়ে গবেষণার ফলে জানা যায়, কোনো রেডিয়েশন নয় এটি ঘটতে বাতাসে উপস্থিত অতিরিক্ত কার্বন মনোক্সাইড এবং হাইড্রোকার্বনের জন্য। কার্বন মনোক্সাইড অক্সিজেনের তুলনায় ২০০ গুন তাড়াতাড়ি রক্তে মেশে। তাই শরীরে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমান বেড়ে গেলে এটি মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছাতে বাধা দিয়ে থাকে।অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে ক্লান্তি এবং ঘুমভাবে আসে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ইউরেনিয়াম খনি থেকে কার্বন মনোক্সাইড উৎপন্ন হয়। এই কার্বন মনোক্সাইড বাতাসে মেশে। কিন্তু খনি বন্ধ থাকা সত্ত্বেও কিভাবে কার্বন মনোক্সাইড বাতাসে মিশছে এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।রাশিয়ান গবেষক লিওনিড রিখভানভ জানান, ইউরেনিয়াম খনি বন্ধ হয়ে গেলেও ইউরেনিয়াম ক্ষয়ের ফলে তৈরী হওয়া রেডন ও অন্যান্য গ্যাসের সংমিশ্রনের ফলে তৈরী হয় কার্বন মনোক্সাইড। তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ গ্রামের বাসিন্দারা।তাদের দৃঢ় বিশ্বাস কোনো অলৌকিক কারণেই ঘটেছে এমন কান্ডকারখানা। তাই ভয়ের কারণে একে একে সেই গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বাসিন্দারা।সরকারের পক্ষ থেকে সেই গ্রামের পুনর্বাসনের জন্য পরিবার পিছু ৮৯০ ইউরো করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এই কালাচি গ্রাম পরিচিত হয়েছে 'স্লিপি হলো' নামে।
প্রথমে এই রোগের শিকার হন লিউভক বেলকোভা। তিনি বাজার করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েন। তারপর তাকে হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া হলে ৪ দিন পরে তিনি ঘুম থেকে ওঠেন। চিকিৎসকেরা যদিও জানান তার স্ট্রোক হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু এরপর গ্রামের অনেক মানুষেরই এমনটা শুরু হওয়াতে সন্দেহ বাড়ে। এর পরেও সেই গ্রামের ভিক্তর নামক এক ব্যক্তি বাইক নিয়ে কাজে বেরিয়েছিলেন। তিনিও রাস্তাতেই ঘুমিয়ে পড়েন। তাকে রাস্তায় শুয়ে ঘুমাতে দেখে লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর দেখা যায় কালাচিরই একটি স্কুলে ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুক্ষন পরেই শিক্ষক থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রী সকলকেই ঘুমাতে দেখা যায়। ২০১৩ সালেই প্রায় ১২০ জন এই অদ্ভুত ঘুমের শিকার হয়েছিলেন। এর পর ধীরে ধীরে এই রোগটি ছড়িয়ে পড়তে থাকে গ্রামের কোনায় কোনায়।
এই অদ্ভুত ঘুমের কারণ জানার জন্য সেই গ্রামের মাটি থেকে শুরু করে জল সবকিছুরই পরীক্ষা করা হয়। এর সাথে সাথে অস্বাভাবিকভাবে ঘুমিয়ে পড়া মানুষদের স্বাস্থ্যের নানা পরীক্ষা করা হয়। রেডিওলজি থেকে শুরু করে টক্সিকোলজি বাদ যায়না কোনো পরীক্ষাই। তার পরেও খোঁজ মেলে না কারণের। গ্রামবাসীদের ব্রেনের স্ক্যান করে দেখা যায় বেশ কিছু পরিমান তরল জমা হয়েছে তাদের ব্রেনে। একে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ইডিমা। কিন্তু কি কারণে হয়েছে এই ইডিমা তা নিয়েও ধন্ধে রয়েছে চিকিৎসকগন।
চিকিৎসকগন এর কিনারা না করতে পারলেও গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, তাদের সন্দেহের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে কিছুদূরে অবস্থিত একটি ইউরেনিয়াম খনি। এই গ্রামের পাশের গ্রামে একসময় বাস করতো খনিশ্রমিকরা। জানা যায়, এই গ্রামও একদিন ঘুমের গ্রাসে চলে যায়।১৯৯০ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া সেই খনি এলাকার বিকিরণ মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা যায় তা এখনো বিপদসীমা অতিক্রম করেনি।বৈজ্ঞানিকরা জানান, রেডিয়েশনের ফলেও এরকম হওয়ার কথা নয়। রেডিয়েশনের মাত্রা বেশি হলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিকৃতি ঘটতে পারে। এছাড়াও ক্যান্সারের মতো মরণ রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। কিন্তু ঘুমিয়ে পড়ার কোনো কারণ রেডিয়েশনের সাইড এফেক্ট হতে পারেনা।বৈজ্ঞানিক কোনো কারণ না মেলায় গ্রামের বাসিন্দারা বিশ্বাস করতে শুরু করে এমন জিনিস হয়তো কোনো ভিনগ্রহের বাসিন্দাদের উপস্থিতির কারণে হয়েছে।
কিন্তু ২০১৫ সালে এই নিয়ে গবেষণার ফলে জানা যায়, কোনো রেডিয়েশন নয় এটি ঘটতে বাতাসে উপস্থিত অতিরিক্ত কার্বন মনোক্সাইড এবং হাইড্রোকার্বনের জন্য। কার্বন মনোক্সাইড অক্সিজেনের তুলনায় ২০০ গুন তাড়াতাড়ি রক্তে মেশে। তাই শরীরে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমান বেড়ে গেলে এটি মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছাতে বাধা দিয়ে থাকে।অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। ফলে ক্লান্তি এবং ঘুমভাবে আসে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ইউরেনিয়াম খনি থেকে কার্বন মনোক্সাইড উৎপন্ন হয়। এই কার্বন মনোক্সাইড বাতাসে মেশে। কিন্তু খনি বন্ধ থাকা সত্ত্বেও কিভাবে কার্বন মনোক্সাইড বাতাসে মিশছে এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।রাশিয়ান গবেষক লিওনিড রিখভানভ জানান, ইউরেনিয়াম খনি বন্ধ হয়ে গেলেও ইউরেনিয়াম ক্ষয়ের ফলে তৈরী হওয়া রেডন ও অন্যান্য গ্যাসের সংমিশ্রনের ফলে তৈরী হয় কার্বন মনোক্সাইড। তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ গ্রামের বাসিন্দারা।তাদের দৃঢ় বিশ্বাস কোনো অলৌকিক কারণেই ঘটেছে এমন কান্ডকারখানা। তাই ভয়ের কারণে একে একে সেই গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বাসিন্দারা।সরকারের পক্ষ থেকে সেই গ্রামের পুনর্বাসনের জন্য পরিবার পিছু ৮৯০ ইউরো করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এই কালাচি গ্রাম পরিচিত হয়েছে 'স্লিপি হলো' নামে।