মোহনবাগান – ০
পিয়ারলেস – ৩ (আনসুমানা ক্রোমা – ২, লক্ষীকান্ত মান্ডি)
ডুরান্ড কাপ এর প্রথম ম্যাচে মহামেডানকে হারানোর পর মোহন-সমর্থকরা আশাবাদী ছিল তাদের সুদিন আবারও ফিরে এল। কিন্তু কলকাতা ময়দান যে বেশিদিন কাউকে খুশি রাখতে পারে না তা বুঝতে পারলেন স্প্যানিশ কোচ কিবু ভিকুনা। মঙ্গলবার কলকাতা লিগের প্রথম ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে জহর দাসের পিয়ারলেস দেখিয়ে দিল, কম বাজেটেও ভালো ফুটবল খেলা সম্ভব। আর মহামেডান ম্যাচের নায়ক সালভা চামোরোর শেষ মুহুর্তে পেনাল্টি মিস যেন মোহনবাগান মাঠের দর্শকদের কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটে।
একেবারে প্রথমসারির দল নিয়ে মাঠে নেমেছিল দুই পক্ষই। যেখানে পিয়ারলেসে ছিল প্রাক্তন মোহনবাগানী আনসুমানা ক্রোমা ও ময়দানের পোড়ো খেলোয়াড় অ্যান্টনি উলফ, সেখানে মোহনবাগান একেবারে স্প্যানিশ ধাঁচে প্রস্তুত। বল দখলের লড়াইয়ে মোহনবাগান এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে পিছিয়ে থাকেনি গতবারের রানার্সরা। ৮ মিনিটে ক্রোমার শট বাঁচান গোলকিপার শিল্টন পাল। কিন্তু ২১ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় পিয়ারলেস। অসাধারণ একটি থ্রু বলে ক্রোমা তার গতিতে মোহনবাগান এর ডিফেন্ডারদের হারিয়ে গোল করেন। গোল হজম করে মোহনবাগান এর স্ট্রাইকাররা যেন তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে নেমেছিলেন, কিন্তু পিয়ারলেস এর ডিফেন্ডারদের সৌজন্যে প্রথমার্ধে আর তেমন মুশকিলে পড়তে হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধেও প্রায় একই প্রতিচ্ছবি দেখা গেল। কিন্তু ৫৪ মিনিটে সমতায় ফেরার দুর্দান্ত জায়গায় এসেছিল সবুজ-মেরুণ। ধনচন্দ্র সিং এর ক্রসে রোমারিও হেড করে পাঠান চামোরোকে, কিন্তু চামোরোর শট লাগে বারে। এরপর ৫৮ মিনিটে উলফের পাসে পিয়ারলেস এর স্ট্রাইকার অনিল কিস্কু শট মারলে সেটিও বারে লাগে। এরপর ৬৫ মিনিটে ফাঁকা গোল পেয়েও মিস করেন অ্যান্টনি উলফ। কিন্তু পিয়ারলেস এর পরিবর্ত হিসেবে নামা লক্ষীকান্ত মান্ডি নেমে সকল হিসেব পালটে দেন। ৩ মিনিটে ২টি গোল করে ম্যাচ নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে পিয়ারলেস। ৭৬ মিনিটে পঙ্কজ মৌলার পাস পেয়ে লক্ষী যখন দেখেন মোহন গোলকিপার শিল্টন উপরে উঠে এসেছে, তখন তার উপর দিয়ে লব করে গোলে বল ঢোকান তিনি। এরপর ৭৮ মিনিটে আবারও শিল্টনের উপর দিয়ে লব করে নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোলটি করেন ক্রোমা। শেষের দিকে অভিনব বাগ, বক্সে ফাউল করে বসেন নাওরেমকে, পেনাল্টি পেলেও সেটি সোজা পিয়ারলেস এর গোলকিপার কাইতান এর হাতে দিয়ে বসেন স্প্যানিশ স্ট্রাইকার সালভা চামোরো।
নিজেদের মাঠে মরশুমের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে এমন লজ্জার হার আশাও করেননি কোনও মোহনবাগান সমর্থক। কিন্তু স্প্যানিশ যুগের শুরুতেই এমন ধাক্কা খেলোয়াড়দের মনোবলে কি প্রভাব ফেলে সেটাই দেখার।