দিন কয়েক আগে একটি খবর নজর কেড়েছিল মানুষের। খবরের শিরোনামে ৬ বছরের এক শিশু। ব্রেন ক্যানসারে আক্রান্ত। হায়দ্রাবাদের এক ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সুধীর কুমার টুইট করেন মনু নামের ওই শিশুর কাহিনি।
শিশুটির চিকিৎসা করছিলেন তিনি। হুইলচেয়ারে বসা, কর্কটের দাপটে ক্ষীণ শিশুটি তাঁকে অনুরোধ জানায়, “আমার গ্রেড ফোর ক্যানসার, আর মাত্র ছয় মাস বাঁচব। আবার বাবা-মাকে একথা জানিও না, প্লিজ!” নিজের অসুখের নাম শুনে আইপ্যাড ঘেঁটে সে নিজেই জেনেছিল অসুখ সংক্রান্ত সব তথ্য।
মনুর কথা রাখতে পারেননি চিকিৎসক। বাবা-মাকে জানিয়েছিলেন তার অসুস্থতার কথা। তার আয়ুষ্কাল মাত্র ৮ মাস।
মনু একা নয় এমন আরও কয়েকজন শিশুর কথা পোস্ট করেছিলেন তিনি। বিশ্ব জুড়েই বাড়ছে শিশুদের ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা। এদেশেও আলাদা নয় ছবিটা।
লিউকোমিয়া বা ব্লাডক্যানসার, মেডুলোব্লাস্টোমা বা মস্তিষ্কের ক্যানসার, নিউরোব্লাস্টোমা বিশেষ ধরনের স্নায়ুকোষের ক্যানসার, রেটিনোব্লাসটোমা- চোখের ক্যানসার, হাড়ের ক্যানসার, কিডনির ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
অনেক ক্ষেত্রে কর্কট আক্রমণের শিকার হলেও রোগের লক্ষণ বোঝা যায় না, তাই শিশুদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখা খুব জরুরি। কারণ শিশুরা নিজেদের সমস্যার কথা অনেক সময়ই বলতে পারে না, তাই নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা জরুরি।
নাক দিয়ে রক্তপাত, ক্ষত-আঘাত সারতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় নেওয়া, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস পাওয়া, ঘন ঘন জ্বর, মাথার যন্ত্রণা, শারীরিক দূর্বলতা-এই ধরনের লক্ষণ দেখলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
হেপাটাইটিস বি, হিউম্যান হার্পিস এবং এইচআইভি ভাইরাসও শিশুদের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। অভিভাবক বা পরিবারের কারুর অত্যাধিক ধূমপানের অভ্যাস থাকলে তা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ত্যাগ করা উচিত।
শিশুদের ক্যানসার চিকিৎসায় অগ্রগণ্য নাম সরোজ গুপ্তা ক্যানসার সেন্টার অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট। এখানকার চাইল্ড কেয়ার ইউনিটটি সব দিক থেকেই বিশেষ। ক্যানসার চিকিৎসার পাশাপাশি শিশুদের মানসিক দিকেরও খেয়াল রাখা হয়। মারণ ব্যাধির অভিঘাত যেন শেষ কথা না হয় তাদের কাছে, ফুলের মতো বিকশিত হয়ে ওঠে শিশুর জীবন সেদিকে লক্ষ্য রেখে নেওয়া হয় একাধিক কর্মসূচি।
ক্যানসার সংক্রান্ত চিকিৎসার তথ্যের জন্য ভিজিট করতে পারেন প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইটে।