সন্তান স্কুলে না গেলে শাস্তি পেতে হবে মা–বাবাকে। দুই বছর পর্যন্ত কারাভোগ করতে হতে পারে অভিভাবককে।
দুর্বল অর্থনীতির কারণে ব্যবস্থার জিম্বাবোয়েতে স্কুলগুলোতে ক্রমশ বাড়ছে ড্রপ আউটের হার।
কোনও কোনও জায়গায় ২০ শতাংশ শিশু স্কুলে যায় না। এ অবস্থায় ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে জিম্বাবোয়ে সরকার।
আনা হয়েছে নতুন আইন। সেই আইনে বলা হয়েছে, সন্তান স্কুলে না গেলে মা–বাবার দুই বছর পর্যন্ত কারাভোগ অথবা ২৬০ ডলার জরিমানা হবে।
পাশাপাশি স্কুলের বেতন দিতে না পারলে অথবা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে স্কুল থেকে বহিষ্কার করাকেও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে আইনটিতে।
জিম্বাবোয়ে শিক্ষা দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত বছর জিম্বাবোয়ের স্কুলগুলোতে বেতন দিতে না পারায় ৬০ শতাংশ শিশুকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়।
জিম্বাবোয়ের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের আমলে জিম্বাবোয়ের শিক্ষাব্যবস্থায় বড় মাপের পরিবর্তন এনে ছিলেন। মুগাবে নিজে ছিলেন শিক্ষক। তাঁর শিক্ষানীতি ‘সকলের জন্য শিক্ষা’ বিষয়টি সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল।
১৯৮০ সালে তিনি দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর প্রচুর স্কুল তৈরি হয়েছিল জিম্বাবোয়েতে। বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।
এক সময় আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে জনশিক্ষায় শীর্ষ স্থানে ছিল জিম্বাবোয়ে।
কিন্তু নব্বই দশকে বিনা মূল্যে শিক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। আর তার পরই ধীরে ধীরে ভেঙ্গে পড়ে সার্বিক শিক্ষার হাল। ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়।
তার নিরিখেই শিক্ষা আইনে আবার বড়সড় সংস্কার এনেছে আফ্রিকার এই দেশটি।
সংশোধিত নতুন আইনে ১২ বছর স্কুলে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। আগের প্রস্তাবের চেয়ে পাঁচ বছর বাড়ানো হয়েছে।
২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে ক্ষমতা হারান। পরের বছর তিনি প্রয়াত হন। দেশের জনগণ আশা করেছিল ইমারসন নানগাগোয়া দেশের নড়বড়ে অর্থনীতির হাল ধরবেন। কিন্তু গোটা পরিস্থিতি আরও তলানিতে গিয়ে পৌঁছায়।
শিক্ষার নয়া বিধিতে জিম্বাবোয়ে জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। খাদ্য, ওষুধ থেকে শুরু করে প্রতিটা জরুরী পরিষেবাতেই যেখানে তীব্র সংকট সেখানে নয়া আইন সত্যিই কোনও আলোর দিশা দেখাতে পারবে কী সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অনেকেই আবার বেশ আশাবাদী। নয়া আইনি জিম্বাবোয়ের উন্নতির জন্য সাহসী পদক্ষেপ বলে মনে করছে তারা।