লম্বা গলা। ধারালো ঠোঁট। পিঠের পাশে শক্ত ডানা। কিন্তু আকাশে ওড়ার ক্ষমতা নেই। উটের মত চলন। ইংরেজি ডিকশনারী তাকে একটা নাম দিলেও বাংলা ভাষা তার জন্য আলাদা কোনও নাম বরাদ্দ করেনি। পাখি হয়েও উটের মত রকমসকম। তাই উটপাখি।
বাংলায় যেমন তার ডাকনাম নেই, প্রকৃতি মাতাও তেমন বঞ্চিত করেছে তাকে। আলাদা করে চিনিয়ে দেবার মত কোনও সিগনেচার টিউন তাকে দেয়নি।
মানে, কুকুরের যেমন ঘেউঘেউ, বিড়ালের যেমন মিউমিউ তেমন কোনও ডাক নেই উটপাখির। অন্তত এতদিন ধরে তাই ভাবা হত।
কিন্তু সম্প্রতি একটি ভিডিও, চলে আসা ধারনাকে ভুল প্রমাণ করেছে। এক উটপাখি ফার্মে তোলা ভিডিয়োতে সামনে এসেছে উটপাখির ডাক। তবে কেবলমাত্র পুরুষ উটপাখিরাই ডাকতে পারে।
ভিডিয়োটিতে দেখা গিয়েছে, লম্বা গলার দুই উটপাখি অদ্ভুত সুরে ডাকছে। তাদের গলা দিয়ে বেরিয়ে আসছে হুম-হুম ধ্বনি। যদিও ঠোঁট নড়েনি। অনেক দূর কোনও গুহার ভিতর সিংহের হুঙ্কারের মত।
স্ত্রী উটপাখিদের গলায় কখনও সখনও হিসহিস শোনা যায়।
মশিয়ে শিরিনকাম নামে ইরানের এক ব্যাক্তি এই ভিডিয়োটি করেন।
উটপাখি গলার দৈর্ঘ্য স্বাভাবিক অবস্থায় একরকম। কিন্তু দরকারে তারা তিনগুণ পর্যন্ত লম্বা করতে পারে।
উড়তে না পারলেও, অনেক বিষয়েই এরা পক্ষীজগতে সেরা উটপাখি। পাখিদের মধ্যে আকৃতিতে সবচেয়ে বড়। সেরা দৌড়বাজ। ঘন্টায় ৭০ কিমি বেগে দৌড়তে সক্ষম।
অন্য সব পাখির তুলনায় শরীরের ওজন অনেকটাই বেশি। কোণঠাসা হয়ে পড়লে শক্তিশালী পা দিয়ে লাথি দেয়, ঠোঁট-ও শক্তিশালী হাতিয়ার। ডাঙায় বসবাসকারী প্রাণীদের মধ্যে উটপাখির চোখ সবচেয়ে বড়। উটপাখিই একমাত্র পাখি যার পায়ে দুটি মাত্র আঙুল রয়েছে।