ইচ্ছে থাকলে কি না হয়! কথায় আছে, কারো যদি সদিচ্ছা থাকে, তাহলে সে অসাধ্যও সাধন করতে পারে।
এই প্রবাদেরই প্রতিফলন ঘটেছে রায়গঞ্জের বাসিন্দা রুমকি মোদক-এর ক্ষেত্রে। একেবারে গৃহবধূ থেকে তিনি এখন আন্তর্জাতিক ব্যবসাদার। ঘুরতে গিয়েছিলেন দার্জিলিং-কালিম্পঙ-এ। সেখানে কিছু অর্কিড মন কেড়ে নিয়েছিল। সেগুলি নিয়ে এসে বাড়িতে বাগান করে তার পরিচর্যা শুরু করেন। গাছের নেশা একবার যাকে পেয়ে বসে, সে আর তা থেকে বেরোতে পারে না। রুমকি দেবীর ক্ষেত্রেও হয়েছিল ঠিক তাই। অর্কিড সংগ্রহ করতে থাকেন বিভিন্ন জায়গা থেকে। সংগৃহিত অর্কিডের পরিচর্যা করতে থাকেন নিজের বাগানে।
শুধু এটুকু করেই থেমে থাকেননি রুমকি দেবী। নতুন কিছু করার ইচ্ছা তাঁকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। তৈরী করেন নিজের ওয়েবসাইট। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় গাছগুলির ছবি পোস্ট করেন। সেই ছবি পছন্দ করে বিভিন্ন মানুষ। তিনি বুঝতে পারেন অর্কিড-এর চাহিদা রয়েছে। তিনি আমদানি-রপ্তানির লাইসেন্স করিয়ে নেন। বিদেশ থেকে অর্কিড আনার পরিকল্পনা করেন। ব্যাঙ্কক, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান থেকে নানা প্রজাতির অর্কিড এনে সেগুলিকে বাড়ির ১০০০ বর্গফুট ছাদে রেখে পরিচর্যা শুরু করেন। তারপর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার পেলে সংশ্লিষ্ট ক্রেতাদের কাছে তা পাঠিয়ে দেন। অর্ডার অনুযায়ী বেঙ্গালুরু, মুম্বই, শিলং সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন। এভাবে কিন্তু বর্তমানে তিনি ৩০-৪০ হাজার টাকা মাসে রোজগার করছেন। তিনি ফ্রান্সেও অর্কিড পাঠিয়েছেন। এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেন তাঁর স্বামী মৃণাল সিংহ। দম্পতি তাঁদের বাড়ির ছাদে ভান্ডা, ডেড্রোবিয়াম, ফেলানোসিস, ওনসিডিয়াম, লেডিস স্লিপার সহ প্রচুর অর্কিড সাজিয়ে রেখেছেন। রুমকি দেবীর কাছে ৯০০০ টাকা দামের যেমন অর্কিড রয়েছে, তেমনি ১০০০-১৫০০ টাকা দামেরও অর্কিড রয়েছে। এভাবেই তিনি ছোট একটি শখ থেকে নিজেকে ব্যবসায়ীতে উন্নীত করতে পেরেছেন শুধুমাত্র সদিচ্ছা আর একাগ্রতার মাধ্যমে।