না মশাই, কথাটার মধ্যে একটুও গিমিক নেই। ইন্সিওরেন্স করা এই কাঁথাটি জোকা-র গুরুসদয় মিউজিয়ামে আছে। কাঁথাটির স্পেশিয়ালিটি হল, এর বয়স দেড়শ বছরেরও বেশি, এটি একটি নকশি কাঁথা এবং এতে রঙিন সুতোর নকশায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সেপাই বিদ্রোহের কাহিনী। কাঁথাটির শিল্পী খুলনা জেলার এক জমিদারের মেয়ে, মানদাসুন্দরী দাসী।
‘নকশি কাঁথা’, মানে ‘সুতো দিয়ে নকশা তোলা কাঁথা’। সেকালে নানা নামে নানা কাজে এই কাঁথা ইউস করা হত। তখনকার ফ্যাশনেবল এলিটদের হাতে একধরণের রুমাল দেখা যেত। এগুলো আসলে ছিল পদ্ম-কলকা-পাখি-প্রজাপতির নকশাওয়ালা ‘রুমাল কাঁথা’। আয়না-চিরুণী রাখার জন্য ছিল ব্যাগের মতো দেখতে ‘আরশিলতা কাঁথা’। বই মুড়ে রাখার জন্য ছিল ‘বইতন কাঁথা’।
তবে বিছানার জন্য তখন ছিল, এখনও আছে ‘লেপ’ ও ‘সুজনী কাঁথা’। এগুলো আকারে বড় হওয়ায়, এতে নকশা তোলার স্কোপও বেশি। কাঁথার পাড়ে তোলা হয় লতাপাতার নকশা। মাঝখানে ফুল, পাখি, গাছপালা, পুরাণ, সমাজজীবন, এমনকি ‘নকশি কাঁথার মাঠ’-কবিতার সাজুর মতো নিজের জীবনের ঘটনাও অনেকে কাঁথায় ফুটিয়ে তোলেন। হালে, শাড়ি-শিল্পীরা তো কাঁথার নকশা শাড়িতে এনে কিস্তিমাত করে দিয়েছেন। নাম রেখেছেন ‘কাঁথা-স্টিচ’। যে ফোক-ক্র্যাফট এভাবে আমাদের এনরিচ করে, তাকে এনসিওর করা তো আমাদের দায়িত্ব। তাই না?