স্বাধীন এই দেশে বাস করে মাত্র একটি পরিবার

                      মাত্র ৭৫ বর্গ কিলোমিটারের দেশ, বাসিন্দাও মাত্র  একটি  পরিবার। ১৯৭০ সালের ২১ শে এপ্রিল হাট নদীর তীরে  এই স্বীকৃত স্বাধীন সার্বভৌম অনুরাষ্ট্র  গড়ে  ওঠার গল্পটিও বেশ চমকপ্রদ। 

                     ‘প্রিন্সিপালিটি অফ হাট রিভার নামের এই দেশটি গড়ে ওঠে   ১৯৭০সালের ২১ শে এপ্রিল। সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে লিওনার্দো ক্যাস্টলে নামক  ব্যক্তি এটিকে স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা করেন। বর্তমানে এই দেশটির অবস্থান পার্থ থেকে ৫১৭ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার নর্দাম্পটন শহরের কাছে

                          ঘটনার সূত্রপাত ১৯৬৯ পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া সরকারের একটি আইনকে কেন্দ্র করে  তাতে বলা হয়, ১০০ একরের বেশি জমি কেউ রাখতে পারবে না।  কিন্তু এই বিলের বিরোধিতার সুযোগ বাকি নাগরিকদের ছিলই না।  কিন্তু লিওনার্দোর মালিকানাধীন জমির পরিমান ছিল প্রায় ১৩০০০ একর 

কিন্তু কোনো সমাধান সূত্র না পেয়ে নিজের ভূখণ্ডকে স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা করেন।  অস্ট্রেলিয়ার প্রশাসনের সাথে বিবাদে জড়ানোর পর এই দেশ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। লিওনার্দো নিজেকে 'প্ৰিন্সবলতেন তিনি ভেবেছিলেন ১৯৪৫ এ ‘ব্রিটিশ ট্রেজান  এক্ট  তাঁকে বেশ কিছু সুবিধা দেবে।  গম বিক্রি করে দেশটি চালাতেন তিনি। 

                         ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথের (দ্বিতীয়) যাতে অবমাননা না হয়, সেজন্য নিজেকে কখনো 'রাজা' বলেননি লিওনার্দো। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ৯৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান।  আজীবন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ব্রিটেনের রানীর। সারা পৃথিবীর পর্যটকরাই আসতে পারেন এখানে। সেখানকার ভিসা পেতে লাগে মাত্র ৪ ডলার। অস্ট্রেলিয়া থেকে ৫০০ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে হয় এই দেশে।

                              ২০১৭ সালে ৯১ বছর বয়সে লিওনার্দো তার রাজত্ত্ব ত্যাগ করেন।  দেশের সমস্ত  দায়িত্ব তুলে দেন তার ছেলে প্রিন্স  গ্রেইমের হাতে। এই মুহূর্তে দেশের শাসক তিনি। এ দেশের নাগরিক তাঁর বৃহত্তর পরিবারের সদস্যরাই। এতো ক্ষুদ্র এলাকাকে দেশ বলে দাবি করার মতো অনেক কিছুই আছে এই দেশে। রয়েছে নিজস্ব পতাকা মুদ্রা  তাদের আঞ্চলিক ভাষা ইংরেজি। সরকারি ভাষা ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, এস্পারান্ত।

                           প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই দেশের রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন, বহু মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন।  গোলাপি বিচ থাকায় সেখানে ভ্রমণে যান প্রচুর পর্যটক। কম খরচে এতো ভালো  ঘোরার  দেশ কমই  আছে। যদিও এখানে অনেক রেস্তোরা - হাসপাতাল কিছুই চোখে পড়বে না, তবে অস্ট্রেলিয়া ঘুরতে গেলে সময় পেলে ঘুরে আসতেই পারেন এই দেশে।  

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...