‘প্রকৃতির স্পর্শ আর মানবতাবোধের মাধ্যমে শিশুমনে জ্বালাতে হবে মুক্ত জ্ঞানের বাতি’; শিক্ষক দিবস-এ স্মরণে ভাসিলি সুখম্‌লিন্‌স্কি

সকলেই শিক্ষক নন, কেউ কেউ শিক্ষক; বাকিরা বেতনভুক শিক্ষাকর্মী। শিক্ষক দিবসের এমন দিনে মহান মানবতাবাদী সোভিয়েত শিক্ষক ভাসিলি আলেহান্দ্রোভিচ সুখম্‌লিন্‌স্কিকি’র স্মৃতিচারণের পাশাপাশি শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি আলোচনা করাও ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক। শুধু তথাকথিত শিক্ষক নয়, শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যগুলিকে শিশু মনে গ্রথিত করতে অনস্বীকার্য অবদান রেখে গেছেন তিনি।

১৯৪৮ সালে প্যাভলিশ শিক্ষায়তনের দায়িত্বভার কাঁধে এসে পড়লে নতুন জীবন শুরু হয় তাঁর।

সুখম্‌লিন্সকি মনে করতেন,

জন্মের পর থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রকৃতি ও পরিবেশ থেকে একটি শিশু যা শেখে, ৫ বছরের পর থেকে মৃত্যু অবধি ততটাও শিখে উঠতে পারে না। তাই ৫ বছর বয়স অবধি অত্যন্ত গুরূত্বসহকারে শিশু মনের বিকাশের দিকে নজর দিতে হবে। মূলত বাড়ির পরিবেশ ও যে বিদ্যালয়ে শিশু যাচ্ছে, সেখানকার পরিবেশের উপর নির্ভর করে তার বেড়ে ওঠা। কোনো শিশু যদি পড়াশোনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলে তবে সেটা তাঁর দোষ নয়, বিদ্যালয় ও বাড়ির পরিবেশ এর জন্য দায়ী। শিশু মন সর্বদা মহান কিছু গ্রহণ করতে প্রস্তুত থাকে। তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে যদি মহাজাগতিক স্তরের শিক্ষা প্রদান করা যায়, তাহলে অচিরেই ভবিষ্যতের দ্রষ্টা হয়ে উঠতে পারে তারা, এবং এটা সকল শিশুর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

FotoJet (177)

জীবনের মূল্যবান ৩৫টি বছর ব্যয় করেছিলেন শিশুদেরকে নিজের হৃদয় সমর্পন করে। ব্যস্ত শহর থেকে অনেক দূরে, ইউক্রেনের একটি রিমোট অঞ্চলে প্যাভলিশ প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিলেন তিনি। শিশুদের জন্য নিজে হাতে গড়ে তুলেছিলেন আনন্দনিকেতন। শিশুমনের অন্তরে যে জানার আকাঙ্ক্ষা বাস করে, তা জাগিয়ে তোলাই ছিল সুখম্‌লিন্সকির শিক্ষাপ্রণালীর মূল উদ্দেশ্য। শিশুদের শিক্ষিত করতে গেলে, আগে তাদের ভালোবাসতে হবে, হাত ধরে নিয়ে যেতে হবে প্রকৃতির কাছে, তাদের সূক্ষ্ম মন অধ্যয়ন করে মানবতাবোধের সাথে জ্বালিয়ে দিতে হবে জ্ঞানের বাতিস্তম্ভ। তবেই সেই শিশু তার কাজ, পরিবার, প্রতিবেশী, বিদ্যালয় এবং জন্মভূমিকে ভালবাসতে পারবে। একজন পরিপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে যে মূল গুণগুলি প্রয়োজন হয় তাকে এক কথায় ‘শিব’ বলা যেতে পারে শিব অর্থাৎ সত্যম, শিবম, সুন্দরম; ট্রুথনেস, গুডনেস ও বিউটিনেস। সুখম্‌লিন্সকির শিক্ষাপ্রণালীর মূল উদ্দেশ্যই ছিল এই গুণাবলিগুলিকে শিশু মনে জাগ্রত ও প্রস্ফুটিত করে তোলা।

জীবনের শেষ ২০ বছর বেশ কিছু গ্রন্থ ও আর্টিকেল লিখেছিলেন তিনি। দ্য বার্থ অফ আ সিটিজেন, টু চিলড্রেন আই গিভ মাই হার্ট, দ্য সেকেন্ডারি স্কুল অফ ইন প্যাভলিশ ও দ্য ওয়াইস পাওয়ার অফ দ্য কালেক্টিভ- এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। টু চিলড্রেন আই গিভ মাই হার্ট গ্রন্থটিতে তিনি তাঁর শিক্ষকজীবনের পূর্ণাঙ্গ জর্নাল’কে ধরার চেষ্টা করেছেন। আনন্দনিকেতনে শিশুরা পড়তে আসলে তিনি আগে তাদের অভিভাবকদের সাথে কথা বলতেন। সমীক্ষায় দেখেছিলেন, যেসব শিশু অমনযোগী অথবা সর্বদা উদাস ও আগ্রহহীন, তাঁদের প্রধান সমস্যাগুলি সৃষ্টি হওয়ার কারণ বাড়ির অনুপযুক্ত পরিবেশ, যা শিশুমনন বিকাশের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা গ্রহণ করে। এই বিশেষ শিশুদের তিনি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতেন, এবং অনবরত চেষ্টার ফলে সেই শিশুরাও একটা সময়ের পর অন্যদের মতো জীবনে আগ্রহ ফিরে পেতে শুরু করে, ‘এর দ্বারা কিচ্ছু হবে না’- এই স্থুল চিন্তার মাথায় তিনি বজ্রাঘাত এনেছিলেন, তাদের মনে প্রেম সঞ্চার করে তিনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন প্রতিটি শিশুই প্রতিভাবান, শুধু তাদের প্রতিভাকে চিহ্নিত করে বিকাশপথের অন্তরায়গুলিকে শান্তভাবে সরিয়ে দিতে হবে।

প্রচলিত ধ্যানধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি, এর মূল শিক্ষাই তিনি পেয়েছিলেন আরেক মহান সোভিয়েত শিক্ষক মাকারেঙ্কোর কাছ থেকে। গ্রন্থটির একটি অধ্যায়,

‘প্রকৃতির পাঠ’-এ তিনি হাত ধরে শিশুদের প্রকৃতির কাছে নিয়ে যান, সেখানে প্রতিদিন তিনি প্রকৃতি সম্পর্কিত একটি করে বিষয় শিশুদের সামনে উপস্থাপিত করে তার ছবি আঁকতে দেন তাদের। খুব ভোরে সূর্যোদয় কালে, ঘাসের ডগায় উজ্জ্বল শিশিরবিন্দু প্রত্যক্ষ করে শিশুরা আগ্রহ সহকারে তা খাতায় এঁকে ফেলে। প্রথমবার শিশিরকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয় তাদের। এবং এইভাবেই সবার আঁকা শেষ হলে তিনি শিশুদের প্রথম বর্ণপরিচয় পাঠ দেন; ‘এটাকে বলে শিশির, ছবির নীচে প্রত্যেকে লেখো শি শি র’, এভাবেই আগ্রহ সহকারে প্রত্যেকে নিজেদের খাতায় বানান করে লিখে ফেলে ‘শিশির’।

শিশুরা খুব আশা ও আগ্রহ নিয়ে জীবনের পাঠ নিতে আসতো আনন্দনিকেতনে। যেখানে অনেকেই মনে করতেন রূপকথার জোলো গল্প নিছকই সময় কাটানো ছাড়া আর কিছু নয়, সেখানে সুখম্‌লিন্সকি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন, শিশু মনে দ্রুত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে কার্যকরী ভূমিকা নেয় রূপকথার গল্প। এখান থেকেই প্রথমবারের জন্য তাদের মনে  ভালো-মন্দ, সৎ-অসৎ, ভুল-ঠিক এর ধারণাগুলি স্বচ্ছ রূপ পেতে শুরু করে। “রূপকথা, খেলা ও কল্পনা; শিশুর মননক্রিয়ার মহৎ অনুভূতি ও প্রয়াসের সঞ্জীবনী উৎস। রূপকথার চিত্র ও চরিত্রের প্রভাবে শিশুচিত্তে যে নন্দনতাত্ত্বিক, নৈতিক ও বুদ্ধিমার্গীয় অনুভূতির জন্ম হয় তা ভাবনার সূক্ষ প্রবাহগুলিকে সক্রিয় করে তোলে, তখন শব্দ হয়ে দাঁড়ায় শিশুর মনজীবনের ক্ষেত্র, ভাবনা ও অনুভূতির বাহন।“ তাই কখনই একে তুচ্ছ বলে উড়িয়ে দেওয়া ঠিক নয়, বরং রূপকথার গল্পের মাধ্যমে শিশুমনে ধীরে ধীরে জ্ঞানালোক সঞ্চারিত করাই একজন প্রকৃত শিক্ষকের মূল কর্তব্য।

দীর্ঘ পরিশ্রমের ফলে কিভাবে একজন শ্রমিক তাঁর নির্মাণ গড়ে তোলেন, তা শিশুদের সূক্ষ্মতার সাথে বোঝাতেন ভাসিলি। তাঁদের পরিশ্রমের জন্যই যে আমরা আজ এতকিছু ব্যবহার করতে পারছি, এত স্বচ্ছন্দে জীবনযাপন করতে পারছি, তা সারল্যের সাথে সুকৌশলে শিশুমনে চালনা করতেন। কাজ হল আনন্দের পরিসর, এই জ্ঞান তিনি প্রেরণ করেছিলেন তাদের চৈতন্যে, তাই শুধু বই-খাতাতেই তাঁর শিক্ষকতা সীমাবদ্ধ থাকেনি। মাঠে নিয়ে গিয়ে কি করে চাষাবাদের মাধ্যমে ফসল উৎপন্ন করা যায় এবং দীর্ঘ পরিশ্রমের পর নিজস্ব ফসল উৎপাদনের যে আনন্দ, সেই শিক্ষার মাধুর্য্যসঙ্গীত প্রসারিত করেছিলেন তিনি আনন্দনিকেতনে। ফলে অচিরেই তাঁর বিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষার্থী ঐ বয়সেই নিজস্ব ক্ষেত বানিয়ে কৃষিকার্য শুরু করে দেয়। উৎপাদিত ফসলের কিছু অংশ নিজেদের বাড়িতে ও কিছু অংশ স্থানীয়দের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে এক অপার আনন্দ উপলব্ধি করতো তারা। নতুন কিছু শেখার সময় যখন ওদের চোখ উজ্জ্বল ও ঝলমল করে উঠতো, তখন জীবনে বেঁচে থাকার এক অলৌকিক সুরের মূর্ছনায় কন্টকিত হত তাঁর প্রেমপূর্ণ হৃদয়।  

নোংরা, ঊষ্ণ মাটি, ভোরের শিশিরের থেকে দূরে রাখতে অভিভাবকেরা সবসময় ওদের জুতো পরিয়ে রাখতে চাইতেন এবং জুতো পরিয়ে স্কুলে পাঠাতেন। অভ্যাস না থাকায় গ্রামের শিশুরা যে জুতো পরতে পছন্দ করতো না তা খুব ভালোভাবে বুঝতেন সুখম্‌লিন্সকি। তাদের উদ্দেশ্য ভালো হলেও এর ফল হত সম্পূর্ণ বিপরীত। বাইরের ঠান্ডা ও গরম নিয়ে তাদের মনে অত্যাধিক ভয় সঞ্চারিত করার ফলে প্রত্যেক বছর বেশ কিছু শিশু ইনফ্লুয়েঞ্জা, টনসিল, হুপিং কাশি’তে আক্রান্ত হত। এই ভয় থেকে শিশুদের বের করে আনতে তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, “তাহলে বাচ্চারা, আমরা এখন স্কুলে যাচ্ছি। আমাদের স্কুল হবে খোলা আকাশের নীচে, সবুজ ঘাসের উপর, নাশপাতি গাছের শাখা প্রশাখার নীচে, আঙ্গুরক্ষেতে, সবুজ তৃণভূমিতে। জুতোগুলো খুলে ফেলো, এবং খালি পায়ে থাকো, আগে যেমন থাকতে। কাল থেকে আর জুতো পরে এসো না, এটা আমাদের স্কুলের পক্ষে সবচেয়ে ভালো হবে।“ ভয় থেকেই রোগ বাসা বাঁধে, তাই তিনি মনে করতেন, ঊষ্ণতা ও শীতলতার মতো ব্যাপারগুলিকে একজন শিশুর কোনোভাবেই ভয় পাওয়া উচিৎ নয়।

আমাদের বিশ্ব পর্যটন’ অধ্যায়ে তিনি লিখেছেন, “প্রাথমিক শ্রেণীতে শিক্ষাদানরত শিক্ষকের কর্তব্য হওয়া উচিৎ শিশুর দৃষ্টি যাতে ধীরে ধীরে জন্মস্থানের মাঠ ও বন থেকে আমাদের মাতৃভূমির, তথা সারা দুনিয়ার প্রকৃতি ও জীবনের চিত্র পর্যন্ত পরিব্যপ্ত হয় সে ব্যাপারে সচেষ্ট হওয়া।“

FotoJet (178)

পূর্বপুরুষদের আত্মত্যাগের জন্যেই যে আজ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারছি, তা শিশুদের বোধে স্পন্দিত করেছিলেন সুখম্‌লিন্সকি। “শিশুদের অল্পবয়স থেকেই মানবজাতির ভাগ্য, উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগের বৃহৎ জগতের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া উচিৎ। শিশু অনুভব করুক যে আজও পৃথিবীতে এমন সব শক্তি আছে যারা নতুন করে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধসুচনার জন্য প্রস্তুত। শিশুদের হৃদয়ে শান্তির শত্রুদের প্রতি গভীর ঘৃণাবোধ থাকুক, নিজেদের পিতৃপিতামহের বীরত্বপূর্ণ কীর্তিকান্ডের মধ্যে থেকে শিশুরা এই দৃঢ় বিশ্বাস আহরণ করুক যে মানুষ ভাগ্যের ঘূর্ণাবর্তে পরা কোনো ধূলিকণা নয়, মানুষ হল এক প্রচন্ড শক্তি। মাতৃভূমির অতীতের বর্ণনা প্রসঙ্গে আমি উজ্জ্বল দৃষ্টান্তের সাহায্যে শ্রমিকশ্রেণীর শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধিদের নিঃস্বার্থ সংগ্রামের কথা বলি, মানুষে মানুষে শোষণ যাতে না থাকে, মেহনতীরা যাতে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে, যারা সম্পদ সৃষ্টি করছে তারা যাতে সম্পদের মালিক হতে পারে তার জন্য তাদের সংগ্রামের পরিচয় দিই।“

সৌন্দর্য, সততা ও প্রেমপূর্ণ ভাসিলির শিক্ষা শিশুদের এই চিন্তায় উন্নীত করে যে, “ফ্যাসিবাদ ও জার্মান জনগণ এক নয়। জর্মানির শ্রমিকশ্রেণীর শ্রেষ্ঠ সন্তানরা হিটলারী প্রতিক্রিয়ায় শাসিত দিনগুলিতে ফ্যাসিবাদের বিরূদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজেদের অধিকারের পক্ষে লড়াই চালিয়ে গেছেন।“ অর্থাৎ রাষ্ট্র ও দেশের মানুষ যে এক নয়, ঐটুকু শিশুমন এই জ্ঞান পূর্ণমাত্রায় আহরণ করতে সমর্থ হতে পারে, যদি সুখম্‌লিন্সকির মতো কোনো মহান শিক্ষকের আবির্ভাব ঘটে তাদের জীবনে।

পৃথিবীর ওজন কত, সূর্যের ওজন কত, কোন কোন পদার্থ দিয়ে সূর্য গঠিত, কিভাবে গাছের ও মানুষের জন্ম হয়, মানুষ কিরকম অসাধারণ সব যন্ত্র আবিস্কার করেছে, কত সালে কি ঘটেছে, এইসব অতিপ্রিয় (বিশেষত স্কুলপাঠ্যে) সংবাদ প্রদান থেকে বিরত থাকুন, ছোটো ছেলেমেয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে এমনই উপদেশ দিয়েছিলেন লেভ তলস্তয়। তলস্তয়ের মতো সুখম্‌লিন্সকিও বিশ্বাস করতেন, শিশুদের কাছে তথ্যভারাক্রান্ত বিবরণ রাখা উচিৎ নয়, তাতে তারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। “ছোটো শিশুর কাছে শিক্ষক হলেন ন্যায়পরায়ণতার জীবন্ত প্রতিমূর্তি। অসন্তোষজনক নম্বর পাওয়ার পর স্কুলের প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর মনোভাব কেমন হয় তা একবার তার চোখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করুন। শিশু যে কেবল নিজেকে অসুখী মনে করে তাই নয়, শিক্ষকের প্রতি সে পোষণ করে বিরূপ মনোভাব, কখনও কখনও শত্রুতাপূর্ণ মনভাবও বটে। আসলে শিশু কোনো একটা ব্যাপার বুঝতে না পারায় শিক্ষক তাকে খারাপ নম্বর দিয়েছেন, আর এর জন্য শিশুর কাছে তিনি হয়ে উঠলেন পক্ষপাতদুষ্ট লোক।“

আজকের সমাজে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে অধিকাংশ অভিভাবকই তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠান মূলত দু'টি কারণে, সামাজিক মর্যাদা রক্ষার্থে ও প্রচুর নম্বর সংগ্রহের অভিপ্রায়ে। অথচ শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যগুলি তাদের কাছে অধরা রয়ে যায়। নিজের অন্ন একটি পিঁপড়েও জোগাড় করে নিতে পারে, তাই শিক্ষার উদ্দেশ্য কখনই চাকরি অর্থাৎ অর্থ উপার্জন হওয়া উচিৎ নয়। জীবনের ইউনিভার্সিটিতে যে কোনো ডিগ্রী নেই, অনন্ত সময় ধরে যে তা চালিয়ে যাওয়া যায়- এই শিক্ষায় যিনি ছাত্রদের শিক্ষিত করেন, তিনিই একজন প্রকৃত শিক্ষক।  

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...