ইতিহাস বিষয়টি নিয়ে অনেক রকম ধারণা থাকলেও তা প্রতি মুহূর্তে নানা চমক সৃষ্টি করে চলেছে, যা নিঃসন্দেহে পরিবর্তন আনছে বিশ্ব ইতিহাসে। সম্প্রতি এমনি কিছু চমকপ্রদ তথ্যানুসন্ধান শুরু হয়েছে তুরস্কে। আজ সেই নিয়েই কথা হোক।
পৃথিবীর অন্যতম বিস্ময়– মিশরের পিরামিড, তার উচ্চতার জন্য। সময়ের পরিবর্তন, ঐতিহাসিক তথ্যানুসন্ধান, গবেষণা একের পর এক নতুনত্বের সন্ধান দিয়েছে। একটা সময়ের পর জানা যায় তার আগে সৃষ্ট মায়া সভ্যতার স্থাপত্য ১৭০ ফুট উচ্চতার। কিন্তু সেই স্থাপত্যই কি সবচেয়ে পুরোনো? সম্ভবত এ বিতর্কে দাঁড়ি টানতে চলেছে সম্প্রতি প্রাপ্ত তুরস্কের এক স্থাপত্য। খননকার্য চলছে সেখানে। তুরস্কের প্রাচীন শহর উরফা থেকে ছয় মাইল দূরে আবিষ্কৃত হয়েছে প্রত্নক্ষেত্র গোবেকলি টেপ। এখনও পর্যন্ত খননকার্য করে যে স্থাপত্যের সন্ধান মিলেছে তা বিশ্লেষণ করে প্রত্নতাত্বিক আর ঐতিহাসিকরা দাবি করেছেন, যে গোবেকলিটেপ অন্তত ১৩ হাজার বছরের প্রাচীন! হিসেব বলছে মিশরের পিরামিডের থেকেও আট হাজার বছর আগে তৈরি হয়েছিল এই স্থাপত্য। কি এমন পাওয়া গেছে? অনেকগুলো গোলাকার পাথরের স্ট্রাকচার ছড়িয়ে আছে, মাঝে মাঝে উঠে আছে থামের ধ্বংসাবশেষ। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী অনুমেয় এই স্থাপত্য মূলত তুরস্কের প্রাচীন একটি মন্দির। যদিও ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, এখনও পর্যন্ত গোটা স্থাপত্যের খুব সামান্যই আমাদের সামনে এসেছে! একটা বিরাট অংশ এখনও মাটির তলায়। পুরোটা সামনে এলে বিশ্ব ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের উন্মোচন হবে।
আরো আশ্চর্যের বিষয় হলো, আনুমানিক ১৩ হাজার বছর আগে কিন্তু ধাতুর কোনো অস্ত্র আবিষ্কার হয়নি। অথচ সেই সময় তৈরি হয়েছে এই বিশাল স্থাপত্য! এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, গোবেকলিটেপ-ই পৃথিবীর প্রাচীনতম মেগালিথিক স্থাপত্য। শুধু তাই নয়, বিশ্বের প্রাচীনতম মন্দিরের স্বীকৃতিও মিলতে পারে গোবেকলিটেপের। আপাতত, বিশ্ব ইতিহাসে আর কি পরিবর্তন হতে চলেছে তা জানা শুধু সময়ের অপেক্ষা।