বাংলা ভাষায় মহাভারতের প্রথম অনুবাদক কবি সঞ্জয়

একটা সময় ছিল যখন বাঙালি বাড়ির অন্দর থেকে নাটমন্দির সব জায়গাতেই অনিবার্য উপস্থিতি ছিল কাশীরাম দাসের মহাভারতের। বেদব্যাসের মূল সংস্কৃত মহাভারতকে প্রথম বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন কাশীরাম দাস। এতদিন পর্যন্ত বাংলা ভাষা সাহিত্যের ইতিহাস এই তথ্যই দিয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি উঠে এল নতুন তথ্য।

কাশীরাম দাস মহাভারত অনুবাদ করেছিলেন ষোড়শ শতাব্দীতে। কিন্তু মহাভারত বাংলা ভাষায় অনুবাদ হয় তারও আগে। পঞ্চদশ শতাব্দীতে।  করেছিলেন বাঙালি কবি সঞ্জয়। কাশীরাম দাসের জন্মের একশো বছর আগে। কিন্তু তা  

  মহাভারতের বাংলা অনুবাদক কাশীরাম দাস নয়, বাংলা ভাষায়  মহাভারতের প্রথম অনুবাদক কবি সঞ্জয়। অবসর প্রাপ্ত সরকারী আমলা  প্রদীপ ভট্টাচার্যের হাত ধরে উঠে এল এই তথ্য। কবি সঞ্জয়ের জীবনকে আলোচনায় ফিরিয়ে এনেছেন তিনি।

১৯৬৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এম কে ঘোষ প্রথম এই তথ্য সামনে এনেছিলেন।

কামরূপ, শিলচর, সিলেট, চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী বহু জায়গাতেই  জীবন কাটিয়েছিলেন কবি। সেই সব জায়গা থেকে পঞ্চদশ শতাব্দীতে কবি সঞ্জয়ের লেখা মহাভারতের ৭০ টি পান্ডুলিপি উদ্ধার করেন এবং পাঠকের দরবারে পৌঁছে দেন।

১৯৬৯- এ প্রকাশিত কবি সঞ্জয়ের মহাভারত আজ হারিয়ে গিয়েছে। তবে  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে একটি কপি সংরক্ষিত আছে।

প্রদীপ ভট্টাচার্য বহু বছর ধরে মহভারতের অনুবাদ নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন। তাঁর মধ্যে পি লাল- এর করা মহাভারতের ইংরেজি মহাভারত এবং  জৈমিনি মহাভারতও আছে। তাঁর মহাভারত নিয়ে গবেষণা চলাকালীন পঞ্চদশ শতকে কবি সঞ্জয়ের মহাভারত অনুবাদের তথ্যটি সামনে আসে।

সঞ্জয়ের বাংলা ভারতের ইংরেজি অনুবাদ করেছেন প্রদীপ ভট্টাচার্জ। সংস্কৃত মহাভারতকে পাঁচালির ঢঙে পয়ার ছন্দে অনুবাদ করেছিলেন। মূলত গ্রামের মানুষদের জন্য।

তবে বেদব্যাসের মূল সংস্কৃত মহাভারতের থেকে সঞ্জয়ের মহাভারতের চরিত্রগত কিছু তফাৎ-ও আছে। তাঁর অনুবাদ করা মহাভারতে বেশ কিছু নতুন চরিত্র যোগ হয়েছে। বাঙালি সংস্কৃতি এবং সমাজ ভাবনা থেকে উঠে এসেছে চরিত্রগুলি। চরিত্রের গায়ে লেগেছে রূপকথার ছোঁয়া।

 

 

 

  

 

  

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...