বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পুজোর 'পরিবেশবান্ধব' মন্ডপ-মূর্তি তুলে ধরছে নতুন বার্তা

বিগত কয়েক বছর ধরেই দেশের নানা প্রান্ত জুড়ে বেড়েছে পরিবেশবান্ধব মূর্তির চল, এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পরিবেশের কথা মাথায় রেখে উড়িষ্যার নটরাজ ক্লাবে গড়ে তোলা করা হয়েছে কাঁচকলার তৈরী গনেশ মূর্তি। একেই বোধ হয় বলে রথ দেখা ও কলা বেচা। কারণ, পূজোর দিনগুলি এগোনোর সাথে সাথে নিজে থেকেই পাক ধরতে শুরু করবে কলায়। আর পেকে গেলেই তা পূজো শেষে পৌঁছে গিয়েছে ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে।

এই খবর সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই পড়ে গিয়েছে। এই মহান উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতে এগিয়ে এসেছেন বহু মানুষ। শুধু উড়িষ্যার মানুষই নয়, দেশের অন্যান্য রাজ্যের মানুষেরাও উপস্থিত হচ্ছেন এই অভিনব মূর্তি স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করতে। ২০০১৭-তে, উড়িষ্যার সম্বলপুর গ্রামে বাঁশ এবং কলার তৈরী পরিবেশবান্ধব মূর্তি দিয়ে এই উদ্যোগের সূচনা ঘটেছিল। তারপর থেকে দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে পরিবেশবান্ধব পূজোর ভাবনা।

এটাই নতুন নয়, এর আগেও নারকেল, রুদ্রাক্ষ, লাড্ডু, শঙ্খের খোলের মতো বায়োডিগ্রেডেবল সামগ্রী দিয়ে ২৫ ফুট বিশিষ্ট অভিনব প্যান্ডেল নির্মাণ করে তাক লাগিয়েছেন নটরাজ ক্লাবের সদস্যরা। এই ধরণের পরিবেশবান্ধব প্যান্ডেল ও মূর্তি তৈরী করার প্রধান কারণ হল পুনর্ব্যবহার। অর্থাৎ পূজোর পর মূর্তি জলে ভাসিয়ে অপচয় না করে তাঁকে পুনরায় পরিবেশ ও জীবের সেবায় ব্যবহার করাই এর প্রধান লক্ষ্য।

উড়িষ্যা ছাড়াও এ বছর আরও কিছু রাজ্যে এই ধরণের পরিবেশবান্ধব মূর্তি নির্মাণ করার দৃষ্টান্ত নজরে এসেছে। ব্যাঙ্গালোরের পুট্টেনগাল্লি গণেশ মন্দিরের কাছে প্রায় ৯০০০ নারকেল দিয়ে ৩০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। গত ২০ দিন ধরে প্রকল্পটিতে নিযুক্ত থেকে ৭০ জন ভক্তের সহায়তায় এই মন্ডপ পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে। নারকেলের পাশাপাশি ২০টিরও বেশী শস্যাদি ব্যবহৃত হয়েছে মন্ডপসজ্জায়। গতবছর এখানকার মন্ডপসজ্জায় আখ ব্যবহার করা হয়।

পরিবেশবান্ধব মন্ডপ নির্মাণ প্রথম না হলেও, দরিদ্রদের পেট ভরাতে তা ব্যবহার করার ঘটনা বোধ হয় এটাই প্রথম। আগামী দিনে এই ধরণের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে জনমানসে সচেতনমূলক বার্তা প্রেরণ করবে, তার পাশাপাশি পরিবেশের দিকে দৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রেও অনস্বীকার্য ভূমিকা নেবে এই উদ্যোগ।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...