একেকটি বেড়া টপকিয়ে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা অগ্রগামী হয়ে চলেছেন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারদের ভোটদানের অধিকার এমনই একটি পদক্ষেপ। সচেতনতা বৃদ্ধির সাথে সাথে নিজের পরিচয় নিয়ে সামনে আসছেন অনেকে। তারই প্রমান লক্ষ্য করা গেল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে। এ বছর বীরভূম জেলায় তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুন রূপে বলে জানিয়েছেন বীরভূম জেল প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
২০১৬র লোকসভা নির্বাচনে পুরুষ ভোটার ও মহিলা ভোটার এর বাইরে কিন্নর গোষ্ঠী রূপান্তরকামী -দের 'অন্যান্য' তালিকা থেকে 'তৃতীয় লিঙ্গের' স্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এরপর গত লোকসভা নির্বাচন এবং বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার তালিকায় এর তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। সেসময় ২০ জন থেকে মাত্র দুজন যুক্ত হয়ে ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ২২জন। তবে এবছর আরো ১৭ জন সে তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা বৃদ্ধিকে ইতিবাচক প্রভাব হিসেবে দেখছেন বীরভূম জেলা প্রশাসন। বীরভূমে এবারের মোট ভোটার ২৬ লক্ষ ৭০ হাজার ৪২৬ জন। এদের ভিতর মহিলা ভোটার ১৩ লক্ষ ১৪ হাজার ৪৬৬ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৩৯ জন।
লোকসভা নির্বাচনের সময় সর্বোচ্চ আদালত থেকে কিন্নর গোষ্ঠীর মানুষদের 'তৃতীয় লিঙ্গ' স্বীকৃতির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তৃতীয় লিঙ্গদের সরকারি চাকরির সুবিধা, ভোটার কার্ড এবং পাসপোর্ট-এরও ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হতে গেলে প্রথমে চিকিৎসক এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সার্টিফিকেট নিয়ে নাম পরিবর্তন করতে হবে কোনও কিন্নরগোষ্ঠী, রূপান্তরকামী বা রূপান্তরিতকে। ব্যবস্থাটি ব্যয় ও সময় সাপেক্ষ হলেও যারা নিজ পরিচয়ে ভোটার হিসেবে নথি ভুক্ত হচ্ছেন, তাদের ইচ্ছেকে ইতিবাচক চোখে দেখছে বীরভূম জেলা প্রশাসন কর্তা।