চলতি মরশুমের শুরুতেই কানাঘুঁষো শোনা যাচ্ছিল, আসন্ন (ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া) অ্যাসেজ সিরিজে ক্রিকেটের এই ‘মর্ডানাইজেশন’ সম্পর্কে। সেই কানাঘুঁষোতেই সিলমোহর দিয়ে তা খুব দ্রুতই বাস্তব রূপ পেতে চলেছে। জানা যাচ্ছে, এবার থেকে টেস্ট ক্রিকেটেও খেলোয়াড়দের জার্সিতে নাম ও নম্বরসহ বাইশ গজে নামতে দেখা যাবে।
চলতি বছরের প্রথম দিকেই প্রাথমিক কথাবার্তা শুরু হয়ে গিয়েছিল। মার্চ মাসে এ ব্যাপারে প্রথম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর যেহেতু অ্যাশেজ সিরিজ দিয়েই সুত্রপাত হচ্ছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি প্রস্তাবটিকে সর্বান্তকরণে স্বাগত জানাচ্ছে। আইসিসি মনে করছে, টেস্ট ক্রিকেটকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে এই ধরণের উদ্যোগের প্রকৃত প্রয়োজন রয়েছে।
৫০ ওভারের ওয়ান ডে ক্রিকেটে খেলোয়াড়েরা রঙিন পোশাকে খেলছেন বহু বছর ধরেই। একসময় সাদা পোশাক পরে ময়দানে নেমে খেলতে হতো খেলোয়াড়দের। ফুটবল ও অন্যান্য খেলার মতো খেলোয়াড়দের জার্সি নম্বর লেখাও প্রাসঙ্গিক হয়েছে বহুদিন আগে থেকে। জার্সির পেছনে খেলোয়াড়দের নাম থাকার বিষয়টিও অনেক প্রাচীন।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের পোশাকে নাম ও নম্বর থাকলেও টেস্ট ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের পোশাকে প্রাচীন প্রথাটিকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। এবার খুব দ্রুত টেস্ট ম্যাচেও জার্সির পেছনে খেলোয়াড়দের নাম ও নম্বর আমরা দেখতে পাবো। সূত্রের খবর, আসন্ন অ্যাশেজ সিরিজেই এমনটা ঘটতে দেখা যাবে।
১৮৭৭ সালে টেস্ট ক্রিকেটের উত্থানের পর থেকে কালের নিয়মে অনেক ব্যাপারেই একাধিক পরিবর্তন সামনে এসেছে। জার্সির আধুনিকরণ হতোই। কিন্তু পোশাকের নাম ও নম্বরের ক্ষেত্রে ১৪২ বছরের প্রাচীন এই প্রথা ও পরম্পরা সকলে টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল। জার্সির পেছনে নাম ও নম্বর ক্রিকেট জগতে নিঃসন্দেহে একটা বড় পরিবর্তন।
টেস্টের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করবার উদ্দেশ্যে মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি), ক্রিকেটের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা মেরিলিবোন নতুন যে প্রস্তাবনাগুলো সামনে নিয়ে এসেছিল, জার্সিতে নাম ও নম্বর লেখার কথা সেই তালিকাতেই অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০০১ সালে ইংল্যান্ড প্রথম টেস্ট ম্যাচে খেলোয়াড়দের টুপিতে নম্বর লেখার প্রচলন শুরু করে। আর তারপর থেকে এ যাবৎ প্রায় সব দেশই (যারা ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করে থাকে) তা অনুসরণ করে এসেছে বিগত ১৮ বছর ধরে।
"আমার এই প্রস্তাবটা খুবই পছন্দ হয়েছে যে এবার থেকে টেস্ট ক্রিকেটে আমরা খেলোয়াড়দের জার্সিতে নাম ও নম্বরসহ বাইশ গজে নামতে দেখবো। প্রত্যেক খেলোয়াড়কে আলাদা করে চিনে নিতে সাহায্য করতে এটা। ছোটবেলায় যখন আমি অনেক ছোট, আমার মনে সবসময়ই এই প্রশ্নটা আসত। আমি সবাইকে জিজ্ঞেস করতাম অমুক খেলোয়াড়টির নাম কি?" সম্প্রতি হর্ষ ভোগলে টুইট করে এ বিষয়ে তার মতামত জানিয়েছেন।
এই নীতি ও পরম্পরা বিগত কয়েক বছর ধরে একমাত্র সীমিত ওভারের ক্রিকেটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল। এখন টেস্ট ক্রিকেটেও তার অভিষেক ঘটতে চলেছে। ইতিমধ্যেই তাঁর নতুন জার্সি ছবি টুইট করেছেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জো রুট। ক্যাপশনে লিখেছেন, টেস্ট জার্সির পিছনের নাম ও নম্বর। আগামী ১ আগস্ট থেকে এজবাস্টনে শুরু হতে চলেছে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টেস্ট। সেদিন থেকেই দু-দলের খেলোয়াড়দের জার্সির পিছনে ‘অফিশিয়ালি’ নাম ও নম্বর দেখা যাবে।