বিশ্ব ক্যান্সার দিবস হল একটি আন্তর্জাতিক প্রতিপালিত দিবস। প্রতি বছর তাই ৪ঠা ফেব্রুয়ারি বিশেষ ভাবে পালিত হয়ে থাকে দিনটি। এই দিনটিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং ক্যান্সার রোগীদের জীবন ধারার মান উন্নয়নের জন্য ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন এগেইনস্ট ক্যানসারকে সহায়তা করে থাকে। এ বছরে এই বিশেষ দিবসের থিম রাখা হয়েছে "আই এম এন্ড আই উইল"। এই থিমটি ২০২০ ও ২০২১ এর থিম হিসাবে নির্বাচত করা হয়েছে। এই প্রাণঘাতী রোগটি এখনকার প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। ছোট থেকে বড় যে কোন বয়সের মানুষ এখন এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যার ফল স্বরূপ দায়ী করা হচ্ছে আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রাকে। জানা গিয়েছে, মাত্রাতিরিক্ত ধুমপান ক্যান্সারের সব থেকে বড় কারন। তবে এক্ষেত্রে যে বা যিনি ধুমপান করছেন তার থেকে বেশি ক্ষতিকারক হচ্ছে যিনি পাশে দাঁড়িয়ে আছেন তার।
এছাড়া কোল্ড স্টোরে রাখা নানা আমিষ প্যাকেট জাত খাদ্য প্রতিনিয়ত খাওয়ার ফলে এই রোগে আক্রন্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে থাকে। তাছাড়া সূর্যের থেকে আগত অতি বেগুনি রশ্মির ফলে স্কিন ক্যান্সার হয়ে থাকে। অত্যাধিক দূষণ ও আবহাওয়ার পরিবতর্নের ফলে এই মারণ রোগের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক্ষেত্রে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন অত্যন্ত প্রয়োজন।
তবে এখন বিজ্ঞানীরা নানা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন এই মারণ রোগের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য। চেষ্টা করছেন বিভিন্ন রকম ওষুধ নির্মাণের জন্য। আর এই বিষয়ে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছেন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ইঞ্জিনিয়াররা। তাঁরা এমন একটি পিল বানিয়েছেন যা শনাক্ত করবে ক্যানসারকে। জানা গিয়েছে, জল দিয়ে একটা পিল জাস্ট গিলে ফেললেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। পাকস্থলীতে গিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে ফুলেফেঁপে পিংপং বল সদৃশ হয়ে উঠবে পিলটি। এরপরে পিলে থাকা সেন্সর খুঁজে নেবে আলসার। আর শনাক্ত করবে ক্যানসারও। অন্ত্রের যে কোনও অস্বাভাকিতা ধরে ফেলবে দু-ধরনের হাইড্রো জেল দিয়ে তৈরি এই পিলটি। এমনকী ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়াও চিহ্নিত করতে সক্ষম এই পিল। উক্ত বিষয়ে ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, গেলার সঙ্গে সঙ্গে সেটি দ্রুত পাকিস্থলীতে পৌঁছে যাবে। ক্রমশ ফুলে নরম তুলতুলে পিংপং বলের আকার নেবে। পাকস্থলীর তাপমাত্রাও ক্রমাগত মেপে যাবে ওই পিলে থাকা সেন্সর। একটা পিল একটানা তিরিশ দিন কাজ করতে সক্ষম। জানা গিয়েছে, এই একটি নয়, পিলে বেশ কয়েকটি সেন্সর রয়েছে। যার সাহায্যে পিএইচ ব্যালেন্স, ক্ষতিকর ভাইরাস-ব্যাক্টেরিয়াও ধরা পড়বে। তাছাড়া এই বিশেষ পিল শরীরের মেদ কমিয়ে দিতেও সক্ষম। তবে পিলটি যখন বের করার প্রয়োজন পড়বে, তখন ওই ব্যক্তিকে ক্যালসিয়ামের একটি সলিউশন খেতে হবে। তাতে পিলটি পূর্বাবস্থায় ফিরে আসবে। আর পিলটি আবার আগের মত ছোট পিলের আকার ধারণ করবে যার ফলে খুব সহজেই শরীরের বাইরে বেরিয়ে যাবে এটি। এভাবেই বিভিন্ন রকম ওষুধের আবিষ্কারের ফলে এখন অনেকটাই ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব হয়েছে। প্রচুর মানুষ সঠিক চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে পারছেন। এর পর আরো তাড়াতাড়ি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠবেন এমনটাই আশা করা যায়।