উইম্বলডন মানেই ঐতিহ্য। সাদা পোশাক আর লাল স্ট্রবেরির মিশেলে কয়েক যুগ ধরে চলে আসছে উইম্বলডনের এই ধারা। কত ম্যাচের সাক্ষী থেকেছে অল ইংল্যান্ড ক্লাব, কত ঘাম ঝরেছে ঐতিহ্যশালী সেন্টার কোর্টে। কিন্তু এমন মহাকাব্যিক ফাইনালের সাক্ষী থাকতে পারাটা যে ভাগ্যের ব্যাপার তা বলাই যায়। বিশ্বের দুই অন্যতম সেরা টেনিস খেলোয়াড় যখন মুখোমুখি হয়, তখন টেনিস কোর্টে দেখা যায় ম্যাজিক। যা দেখা গেল উইম্বলডন ফাইনালে। দীর্ঘ ৪ ঘন্টা ৫৭ মিনিটের যুদ্ধে টেনিস সম্রাট রজার ফেডেরারকে হারিয়ে উইম্বলডনের সিংহাসন পুনরায় দখল করলেন নোভাক জকোভিচ। ৭-৬, ১-৬, ৭-৬, ৪-৬, ১৩-১২ ফলে পরপর দুবছর উইম্বলডনের খেতাব জিতলেন জকোভিচ।
ম্যাচ যে হাড্ডাহাড্ডি হবে এমনটা আন্দাজ করেছিল সকলেই। প্রথম সেটের টাইব্রেকারে ফেডেরার ৫-৩ এ এগিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত জকোভিচ জিতে নেয় সেটটি। তবে দ্বিতীয় সেটে সার্বিয়ান মহাতারকাকে একেবারে উড়িয়ে দেন ফেডেরার। জকোভিচের সার্ভিস, তিনবার ব্রেক করেন রজার, অপরদিকে একেবারে দাঁড়াতেই পারেননি নোভাক। প্রথম সেটে জোকোভিচ যেখানে ১৪টি উইনার মেরেছিলেন, তার তুলনায় দ্বিতীয় সেটে মাত্র ২টি উইনার মারতে সক্ষম হন তিনি।
তৃতীয় সেটে আবারও দুই প্রতিপক্ষ একে অপরকে এক বিন্দু জমিও দেয় নি। যদিও জকোভিচ সেট পয়েন্ট মারার সুযোগ পেয়েছিল, কিন্তু তার ব্যাকহ্যান্ড শট বাইরে বেরিয়ে যায়, যার দরুণ খেলা ফের চলে যায় টাইব্রেকারে। শেষপর্যন্ত ৫-১ এর লিড নিয়ে শেষপর্যন্ত ৭-৪ এ জকোভিচ তৃতীয় সেটটি জিতে যায়। চতুর্থ সেটে আবারও ফেডেরার তার সকল শক্তি সঞ্চয় করে ঝাঁপিয়ে পড়েন জকোভিচের উপর। তিনি জকোভিচের দুটি সার্ভিস ব্রেক করে সেটটি তার নামে করে নেন। তবে এই সেটে প্রথমবারের জন্য জকোভিচ, ফেডেরারের সার্ভিস ব্রেক করেন।
অবশেষে খেলা গড়ায় পঞ্চম সেট অবধি। দীর্ঘ লড়াই চলে এই সেটে। একবার ফেডেরার তার সার্ভিসে জকোভিচের থেকে পয়েন্ট ছিনিয়ে নিচ্ছে, অপরদিকে জকোভিচ নিজের স্কিল ও স্ট্যামিনায় মাত করছিলেন ৩৭ বছরের ফেডেরারকে। সেটের ফল যখন ৮-৭, তখন ফেডেরারের কাছে দুবার সুযোগ এসেছিল ম্যাচ জিতে নেওয়ার। কিন্তু নিজের ট্রফিকে ছাড়তে রাজিই হননি জকোভিচ। যার দরুণ ১২-১২ অবধি গিয়ে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। আর শেষপর্যন্ত টাইব্রেকারে ৭-৩ ফলে জয়ী হয়ে কেরিয়ারের পঞ্চম উইম্বলডন খেতাব জিতে নেয়, নোভাক জকোভিচ। অন্যদিকে কেরিয়ারের ১৭তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার কাছে গিয়েও ফিনিশিং ল্যাপ পার করতে পারলেন না রজার ফেডেরার।