মহানগরের সমস্ত ফুট ওভারব্রিজ গুলি নিয়ে নয়া সিদ্ধান্ত কলকাতা পুরসভার। মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস রেলস্টেশনের ফুট ওভারব্রিজ ভেঙে পড়া থেকে শুরু করে, সাঁতরাগাছিতে ফুট ওভারব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনা এখনো ভুলতে পারেনি মানুষ। তাই শহরের বুকে থাকা সবক’টি ফুট ওভারব্রিজের ‘হেলথ অডিট’ বা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার নির্দেশ দিলেন কলকাতা পুরসভার কমিশনার 'খলিল আহমেদ'। উক্ত বিষয়ে জানা যায়, গত ২০ মার্চ জারি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। আর সেই বিজ্ঞপ্তিতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, পুর প্রশাসনের অন্তর্গত এলাকায় যেক’টি ফুট ওভারব্রিজ রয়েছে, সেগুলির নির্মাণগত এবং নিরাপত্তার গুণগত মান ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। যে বিভাগগুলি এই ফুট ওভারব্রিজগুলির নজরদারি ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে, তাদের এ ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ফুট ওভারব্রিজগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট আগামী একমাসের মধ্যে তৈরি করে তার কাছে জমা দিতে হবে। ফুট ওভারব্রিজগুলির হেলথ অডিটের বক্তব্য তাদের গায়ে লাগিয়ে দেওয়া হবে। যাতে সাধারণ মানুষ তা পড়তে পারেন।
এই বিষয়ে প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ বিভাগের মেয়র পারিষদ সদস্য বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই বিশেষ ব্যবস্থার অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ পরবর্তীকালে কিছু হলে তার দায় তো পুরসভার উপরই এসে পড়বে। সড়ক ও সিভিল বিভাগের ডিজিদের নজরদারিতে এই হেলথ অডিটের কাজ করতে হবে বলে জানা যায়। এক্ষেত্রে তাঁদের সাহায্য করবেন বিজ্ঞাপন বিভাগের চিফ ম্যানেজার, টাউন প্ল্যানিং বিভাগের ডিজি। পথচারীদের সুবিধার্থে গত কয়েক বছরে শহরে নির্মাণ হয়েছে ডজনখানেক ফুট ওভারব্রিজ। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার এর থেকে ‘সুবিধাজনক’ বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে উক্ত বিষয়ে পথচারীদের অভিযোগ, এই শহরে মূলত বিজ্ঞাপন ঝোলানোর খাঁচা হিসেবেই ফুট ওভারব্রিজের ব্যবহার হয়। নাগরিকদের পরিষেবা দিতে উৎসাহী নয় বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি। পুরসভার এক শীর্ষকর্তা জানান, ফুট ওভারব্রিজ কখনওই তাঁরা দেখভাল করেন না। যে বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলি এগুলি তৈরি করে, তারাই দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণ করে। কারণ, তারা বিজ্ঞাপন দেওয়ার ব্যবস্থা করে তা থেকে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি অর্থ আদায় করে। তবে শহরের ভিতরে কোনও ঘটনা ঘটলে দায় যেহেতু পুর প্রশাসনের উপরই পড়ে, তাই এই কাজ পুরসভাকেই করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে এও বলা হয়েছে, প্রতি ছ’মাস অন্তর হেলথ অডিট করতে হবে এবং পুর কমিশনারের কাছে তার রিপোর্ট দিতে হবে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, কলকাতা পুলিসের তরফেও যাবতীয় সাহায্য করা হবে এই অডিটের কাজে। তাছাড়া আরও বলা হয় যে, মাঝেরহাট উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পর শহরের ২১টি ব্রিজের হেলথ অডিটের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তখনই ফুট ওভারব্রিজগুলির হাল নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা যায়।