চন্দ্রযান ২-এই ল্যান্ডমার্ক মিশনের সাফল্যের দিকে যখন উদগ্রীব হয়ে চেয়ে আছেন সমগ্র দেশবাসী তখন বিক্রম ল্যান্ডারের সফ্ট ল্যান্ডিং-এ পড়ে বাধা। চন্দ্রপৃষ্ঠের দুই কিলোমিটার দূরে ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ হারায় ইসরো। চন্দ্রবক্ষে হঠাৎই হারিয়ে যায় বিক্রম। দেশবাসীর আশা-প্রত্যাশা যেন স্থগিত হয়ে যায় মুহূর্তেই। বিজ্ঞানীমহলে তৈরী হয় হতাশা, তাদের সাধের বিক্রম যাকে দূত হিসাবে পাঠানো হয় চাঁদে তার কুশল অবস্থার বার্তা না পেয়ে অস্থির হয়ে ওঠে সকলেই। পরে অরবিটারের তোলা ছবি থেকে জানা যায় যে চাঁদের বুকেই অক্ষত অবস্থায় রয়েছে বিক্রম। শারীরিকভাবে অক্ষত থাকলেও কতটা কার্যকরী হতে পারবে গবেষণাক্ষেত্রে তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। তবে বিক্রমের খোঁজ মেলায় নতুন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন বিজ্ঞানী থেকে সাধারণ মানুষ সকলে।
তবে এটাই প্রথম নয়, এর আগেও নাকি মহাকাশের অনন্ত সীমায় হারিয়ে গিয়েছে ল্যান্ডার। এরই অনুরূপ একটি ঘটনা ঘটেছে ২০০৩ সালে, যেটি ব্রিটেনের মহাকাশযানের ল্যান্ডার। আমাদের বিক্রমের মতো এটির খোঁজ আর পাওয়া যায়নি। হদিশ মেলে ১১ বছর পর। ব্রিটেনের মার্স মিশনের জন্য ল্যান্ডার 'বিগেল ২' লঞ্চ করা হয়েছিল। ২৫শে ডিসেম্বর এটি ল্যান্ড করার কথা ছিল মঙ্গোল গ্রহের বুকে। কিন্তু একই ভাবে সেই দিনই বিগেল ২-এর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বহু চেষ্টার পরেও আর এর কোনোরকম খোঁজ পাওয়া যায় নি।
১১ বছর পরে নাসার একটি অরবিটার মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎই কাছে চলে আসে হারিয়ে যাওয়া ল্যান্ডারটির। তার হাই রেসোলিউশন ক্যামেরায় ধরা পড়ে যায় বিগেল ২। নির্ধারিত স্থানে ল্যান্ড না করে সেটিকে দেখতে পাওয়া যায় ৪.৮ কিমি দূরে। তবে এক্ষেত্রে ল্যান্ডিং কিন্তু সফলভাবে হয়েছিল বলেই জানা গিয়েছে। কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে ল্যান্ডিং এর সময় সোলার প্যানেল কাজ করা বন্ধ করে দেয়, ফলে রেডিও এন্টেনা ব্লক হয়ে যায়। ছেদ পড়ে সাফল্যের পথে। আর যোগাযোগ সম্ভব হয়ে ওঠেনি কখনো।
তবে আশা করা যায় বিক্রমের নামের সাথে সাফল্যই যুক্ত করা যাবে। ভারতীয় এই দূতের নাম এভাবে হারিয়ে যাবে না গবেষণার জগৎ থেকে। যোগাযোগ আবার করতে সফল হবে বিজ্ঞানীরা।