অত্যাধুনিকতার ছোঁয়া যে শুধু জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলেছে তা নয়, কথ্যভাষার ক্ষেত্রেও প্রভাব প্রতিনিয়ত প্রতিফলিত হয়ে চলেছে। যার ফলস্বরূপ একাধিক নতুন শব্দের আবির্ভাব ঘটেছে ভাষায়। এই যে ভাষার বিবর্তন, এ কিন্তু আজকের ঘটনা নয়। বহু আগেই থেকেই চলছে, স্বাভাবিকভাবে উচ্চারণের বৈচিত্রে বর্ণমালাতেও এসেছে পরিবর্তন। যার প্রমান স্বরূপ এমন এক তথ্য দেব, যা নিঃসন্দেহে বেশ আকর্ষণীয়।
আমরা জানি ইংরাজি ভাষায় ২৬টি বর্ণ। কিন্তু একসময় এই ভাষায় ছিল ৩৫টি বর্ণ - সেই হারিয়ে যাওয়া ৯টি বর্ণের কথাই বলবো।
থর্ন (Þ, þ) এবং এথ (Ð, ð):
এই চিহ্নটির সাথে কমবেশি সকলেই পরিচিত। এখন ইংরেজিতে ‘থ’ লিখতে গিয়ে 'th' লিখতেই অভ্যস্ত আমরা। কিন্তু একসময় এই ধ্বনির জন্য থর্ন (Þ, þ) বর্ণটির আগমন ঘটে। আর অন্যদিকে এথ (Ð, ð) ধ্বনিটি দীর্ঘদিন ধরেই ইংরাজি ভাষায় ছিল। কিন্তু ত্রয়োদশ শতকের শেষ থেকেই এই দুই বর্ণের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়। তার পরিবর্তে ‘th’ যুগ্মবর্ণের আগমন ঘটে।
অ্যাস (Æ, æ):
আন্তর্জাতিক ধ্বনি বর্ণমালার পরিচিত বর্ণ অ্যাস (Æ, æ)। ইংরাজি শব্দে এর উচ্চারণটি হয় /a এবং /e - এর মাঝামাঝি। অভিধানে সঠিক উচ্চারণ বোঝাতে এখনও অ্যাস বর্ণটি ব্যবহার করা হয়। তবে দীর্ঘ অনভ্যাসে ক্রমশ সেটি হারিয়ে যায়।
ইথেল (Œ, œ):
এই বর্ণটির উচ্চারণ মোটামুটি /o এবং /e মিশ্রিত। এর ব্যবহার এখনও ইংল্যান্ড এবং আমেরিকার ইংরাজি ভাষাভাষী মানুষদের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি করে। ‘ডায়রিয়া’ শব্দটির বানান নিয়ে এখনো বিতর্ক থাকলেও এক সময় শব্দটি লেখা হত এভাবে – diarrhœa। আর এখন আমেরিকার মানুষরা লেখেন ‘diarrhea’ এবং ব্রিটিশরা লেখেন ‘diarrhoea’।
ওয়েইন (Ƿ, ƿ):
১৩০০সালের আগে w-র জায়গায় এই ওয়েইন (Ƿ, ƿ) বর্ণটিই ব্যবহার করা হত। কিন্তু ক্রমশ বর্ণটির ব্যবহার কমে আসে এবং এই সময় পাশাপাশি দুটি /u লেখা হতে শুরু করে। আর এই দুটি /u থেকেই /w বর্ণটির জন্ম।
লং ’এস (ſ):
বাংলায় যেমন আমাদের তিনটি [স] ধ্বনির জন্য পৃথক পৃথক বর্ণ ব্যবহার করা হয়, ইংরাজিতে তেমনটা নেই। কিন্তু দুটি s-এর ব্যবহার ছিল এক সময়। একটি লং ’এস আর অন্যটি আমাদের পরিচিত s বারাউন্ড ’এস। কিন্তু এই লং ’এসের চেহারার সঙ্গে f-এর চেহারার সাদৃশ্যের কারণেই ক্রমশ তার ব্যবহার কমিয়ে আনা হয় এবং শেষ পর্যন্ত রাউন্ড ’এসের ব্যবহারই থেকে যায়। যদিও উচ্চারণের পার্থক্য অনেক সময়েই টের পাওয়া যায়।
ইন্সুলার (ᵹ) এবংইয়োহ্ (Ȝ, ȝ):
ইন্সুলার বর্ণের উচ্চারণের সঙ্গে e, I এবং y – এই তিনটি বর্ণের উচ্চারণের যথেষ্ট সাদৃশ্য ছিল। কিন্তু ক্রমশ বর্ণের ব্যবহার নিয়ে জটিলতা শুরু হতে থাকে। ১৭শতকে ᵹ-এর ব্যবহার ছিল বেশি। আবার ১৮শতকে y-এর ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। ক্রমশ তাদের উচ্চারণের মতোই চেহারাও মিলেমিশে যায়। আর তারপরেই ইন্সুলারের ব্যবহার মুছে যায়।
অন্যদিকে ইয়োহ্ - এর উচ্চারণ এখনও টিকে থাকলেও তাকে লেখা হয় মূলত w - এর সাহায্যে। সঙ্গে o এবং u-এর ব্যবহারও করা হয়ে থাকে। যেমন ধরা যাক ‘enough’। এই দুটি শব্দ তখন লেখা হত যথাক্রমে ‘innoʒe’ এবং ‘folʒed’।
অ্যাম্প্রেস্যান্ড:
এই বর্ণটির আসলে চিহ্নটি হল - ‘&’। এর ব্যবহার এখনও ‘এবং’ হিসাবেই আছে। শুধু বর্ণমালা থেকে তার স্থান হয়েছে চিহ্নের তালিকায়।
এই হল ইংরাজি ভাষার নিখোঁজ সেই ৯টি বর্ণ। যাদের প্রয়োজনীয়তা ইংরেজিতে না থাকলেও অন্য ভাষায় আছে বই কি!