লোকসভার সাংসদদের একটু হলেও আফসোস হচ্ছে বৈ কি। হয়ত ভয়ানক আফসোস হচ্ছে, কিন্তু মুখ ফুটে এমনটা জানাতে পারবেন না কেউই। কারন প্রায় বিনা পয়সার খাবার দাবারের যে সুখ এতদিন পেয়ে আসছিলেন দেশের জননেতারা, তা এবারে বন্ধ হতে চলেছে। আর ভর্তুকিতে খাওয়াদাওয়া করতে পারবেন না সাংসদেরা। তবে সর্বসম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এর ফলে সরকারের রাজকোষে সাশ্রয় হবে ১৭ কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমান টাকা বেঁচে গেল একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ফলে।
২০১৫ সাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়ে যায়, তার জেরেই এই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, অর্থাভাবে যেখানে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকছে, সেখানে ভর্তুকি দিয়ে কিভাবে সংসদে খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে? সুবিধেটা তো আম জনতা পাচ্ছেন না। ভর্তুকির সুবিধে শুধুমাত্র দেওয়া হচ্ছে সাংসদ এবং তাদের পরিচিত জনেদের।
সংসদ ভবন সূত্রে খবর, লোকসভার ব্যবসায়িক উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে ওই ভর্তুকি তুলে দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছিলেন স্পিকার ওম বিড়লা। তিনি এ ব্যাপারে খানিক অসন্তোষও প্রকাশ করেন। তখনই সাংসদেরা সর্বসম্মতিতে স্পিকারের প্রস্তাব মেনে নেন। এই বিপুল পরিমান ভর্তুকি লোপ পাওয়ার ফলে সরকার বছরে ১৭ কোটি টাকা সঞ্চয় করতে পারবে। ভর্তুকিপ্রাপ্ত খাবারের মধ্যে ব্রেড-বাটার ৬ টাকা, চাপাটি ২ টাকা, চিকেন কারি ৫০ টাকা, চিকেন কাটলেট(প্রতি প্লেট) ৪১ টাকা, তন্দুরি চিকেন ৬০ টাকা, ফিশ কারি ৪০ টাকা, কফি ৫ টাকা, ধোসা ১২ টাকা, মাটন কারি ৪৫ টাকা, হায়দ্রাবাদি চিকেন বিরিয়ানি ৬৫ টাকা, ভাত ৭ টাকা, স্যুপ ১৪ টাকা। এগুলি পাওয়া যাচ্ছে বাজারের দামের চেয়ে প্রায় ৮০% সস্তায় সংসদ ভবনে।
উত্তর রেলওয়ে, সংসদের চারটি ক্যান্টিন চালায়। জানা গিয়েছে, উত্তর রেলওয়ের তরফে ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরের জন্য লোকসভা সচিবালয়ের কাছে ১৬ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়েছে। তাই খাবারের আসল দাম সাংসদরা না দিলেও রেলওয়ে, সরকারের কাছ থেকে এই টাকা দাবি করেছে। ক্যান্টিনে ভর্তুকি উঠে গেলে সরকার এই টাকা সাশ্রয় করতে পারবে। এ ছাড়াও বৃহস্পতিবার সরকারি তরফে লোকসভায় জানানো হয়েছে, সাংসদদের বাংলো সংস্কার এবং মেরামতির কাজে গত চার বছরে ১৯৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।