ছোট ছোট পড়ুয়াদের স্কুলে যাওয়ার সময় ব্যাগের যে ওজন হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা অত্যন্ত অসন্তোষজনক হয়ে উঠছে। প্রতিটা পিরিয়ডের, প্রতিটা সাবজেক্টের বিভিন্ন বই নিতে হয় প্রত্যেককে। ফলে খুদে ছাত্রছাত্রীদের সাপেক্ষে তা একপ্রকার বিদ্যার ‘বোঝা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ভালো খবর এই যে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্যসরকার সব প্রাইমারি স্কুলগুলোয় 'ব্যাগহীন দিবস' -এর নিয়ম জারি করেছে।
যে স্কুলগুলো এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট-এর আওতায় পড়ে, এরকম প্রতিটি সরকারী এবং বেসরকারী স্কুলে ইতিমধ্যে এই নির্দেশ কার্যকারী হয়েছে। স্কুলগুলোকে প্রতিমাসের প্রথম ও তৃতীয় শনিবার ‘ব্যাগহীন দিবস’ পালন করতে হবে এবং এই দিনটির ব্যাপারে আগাম জানিয়ে দিতে হবে ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের। প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে ছোটদের প্রচুর ‘প্রেসার’ যাতে না নিতে হয় এবং তারা নিজেদের সচ্ছন্দ্য অনুযায়ী উপযুক্ত শিক্ষাগ্রহন করতে পারে, এই বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাপর্ষদ এরকম অভিনব সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে।
অভিভাবক, স্কুলের শিক্ষকেরা প্রত্যেকেই এই সিদ্ধান্তে অত্যন্ত খুশী। মাসে দু’দিন ব্যাগ ছাড়া স্কুলে যেতে পারবে ভেবে ছোট শিশুরাও যথেষ্ট আপ্লুত। শিক্ষামন্ত্রী রাজলক্ষী জানিয়েছেন এই নিয়ম প্রত্যেকটি সরকারী ও বেসরকারী স্কুলগুলো যাতে অবশ্যই পালন করে তার জন্য জরুরী নির্দেশ দেওয়া আছে।
চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন বি ভি এস কুমার, মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন কে কিছুদিন আগে একটি চিঠিতে প্রাথমিক স্কুলের শিশুদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি না হয়, এই কারনে ব্যাগের ওজন কমানোর দিকে নজর দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছিলেন। এই সিদ্ধান্ত তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। পঞ্চম শ্রেনীর এক ছাত্র পি স্রুজানার কথা অনুযায়ী " আমি খুব খুশি স্কুলে দু’দিন ব্যাগ ছাড়া আসতে পারবো। রোজ অন্তত কুড়িটা বই আমাকে ব্যাগে করে নিয়ে আসতে হয়।"
এই পরিকল্পনাটি পরবর্তী পর্যায়ে উচ্চ বিদ্যালয় গুলিতেও শুরু করার জন্য স্টুডেন্ট ফেডারেশন এর সভাপতি নরশিমা সরকারী দপ্তরে আর্জি জানিয়েছেন। দ্বিতীয় শ্রেনীর এক ছাত্রের অভিভাবক বলেছেন মাসে দু’দিন ব্যাগছাড়া স্কুলে আসতে পারার সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত ভালো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অবিলম্বে নিয়ম করা হোক যাতে প্রতিটা প্রাইভেট স্কুলে সঠিকভাবে এই নিয়ম পালিত হয়।
ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তাই তাদের স্বাচ্ছন্দ্য এবং স্বাস্থ্যের যত্ন নিলে অচিরেই গড়ে উঠবে একটা উন্নয়নশীল সমাজ। ইতিমধ্যেই অন্ধ্রপ্রদেশের এই নিয়ম দেশের অন্যান্য রাজ্যে শুরু করার জন্য শিক্ষকরা অনুরোধ জানিয়েছেন। ছোটদের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখলেই তারা মন দিয়ে পড়াশোনা করে দেশের একজন সফল নাগরীক হয়ে উঠতে পারবে।