নিউ টাউনের ইকো পার্ক, শহরের গর্ব বললে একটুও ভুল হবেনা। বিশাল জায়গা সম্বলিত ওই পার্কে বিভিন্ন রকম বিনোদনের আয়োজন যেন দর্শনার্থীদের সময় তথা পয়সা উসুল করে দেয়। রয়েছে বিভিন্ন রকম পশু-পাখি। সেখানকার পশু-পাখিরা যাতে নিশ্চিন্তে থাকতে পারে, সে কথা মাথায় রেখে রবিবার থেকে নিউ টাউনের ওই পার্ক সংলগ্ন দু'কিলোমিটার রাস্তায় ‘নো হর্ন জোন’ কার্যকর করেছে হিডকো।
ইকো পার্কের জীববৈচিত্র কেমন, তা জানার জন্য বছরখানেক আগে জীববৈচিত্র পর্ষদকে দায়িত্ব দিয়েছিল হিডকো। কোন ধরণের পশু-পাখির বাস রয়েছে, তা জানাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য। সূত্রের খবর, মাসখানেক আগে পর্ষদ জানিয়েছে, ৪৮০ একর জায়গা জুড়ে তৈরী পার্কে ১৩টি প্রায় বিরল প্রজাতির জীবজন্তুর সন্ধান পেয়েছে তারা। পাখি রয়েছে ৫৭ রকমের। ১২০ একর জলাভূমিতে বড় ধরনের কচ্ছপের পশাপাশি সন্ধান পাওয়া গেছে ২৮ ধরণের মাছের। পরিযায়ী পাখিরাও নিয়মিত এসে থেকেছে জলাশয়ে। রয়েছে ১৫ ধরণের মাকড়সা এবং ২৯ ধরণের মৌমাছি। লুপ্তপ্রায় হলুদ গিরগিটিও দেখা গেছে নিউ টাউনের এই পার্কে।
শহরে এই প্রথম রাস্তার একটি অংশ পশুপাখিদের স্বার্থে ‘নো হর্ন জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা হল। হিডকোর চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, হোর্ডিং, লিফলেট এবং বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে চালকদের সচেতন করার চেষ্টা চলছে। প্রথমেই জরিমানা আদায় করা হবেনা। পরে বিধাননগর কমিশনারেট-এর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। হিডকো কর্তৃপক্ষকে বেশ কিছু সুপারিশ করে পর্ষদ। 'আশপাশের রাস্তাকে নো-হর্ন জোন ঘোষণা' ছিল উক্ত সুপারিশগুলোর অন্যতম।
সেই সুপারিশ মেনেই ইকো পার্ক সংলগ্ন রাস্তায় ইতিমধ্যে সিগন্যালের পোলের মত ১৩টি পোল বসানো হয়েছে। বিভিন্ন পোলগুলোতে বিভিন্ন রকম বার্তা দেওয়া রয়েছে, যাতে সকলে বিশেষ করে গাড়ির চালকেরা সচেতন হতে পারেন। পর্ষদ হিডকোকে বলে, ভিড়ের বিচারে চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া, জাদুঘর, রবীন্দ্র সরোবরকে টেক্কা দিচ্ছে ইকো পার্ক। তবুও এত মানুষের ভিড় থাকা সত্ত্বেও অন্যান্য পার্কের থেকে অনেক বেশি সংখ্যক পশুর সঙ্গে এখানে সহাবস্থান করছে বিরল প্রজাতির পাখিরা। কিন্তু সতর্কতা অবলম্বন না করলে পরবর্তীকালে ওরা ভালোভাবে এই পার্কে থাকতে পারবেনা।