শয়নে স্বপনে দেখি আসিল এক বুজুরজ্ঞান ।। রাস্তার মাঝে কত লোকে করিতেছে সন্ধান ।। করিতেছে সন্ধান ।। রাস্তা থামায় দিল ।। কাফিলা এলো।। দিল্লীতে নিজামুদ্দিন আউলিয়া এলো..... কিন্তু এই নিজামুদ্দিন আউলিয়া কে? হজরত নিজামুদ্দিন বা শেখ খাজা সৈয়দ মুহাম্মদ নিজামুদ্দিন আউলিয়া ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশে চিশতিয়া সম্প্রদায়ের সূফি সাধক। কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকী বা খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির মতন তিনিও বিশ্বাস করতেন একমাত্র প্রেমের পথেই ঈশ্বর কে লাভ করা সম্ভব। সমকালীন ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দির বারানি জানিয়েছেন যে দিল্লির সাধারণ মুসলমানদের মনের দখল নিয়েছিলেন নিজামুদ্দিন আউলিয়া। নিজামুদ্দিন উত্তর প্রদেশের বাদায়ুনে জন্মগ্রহণ করেন এবং পাচঁ বছর বয়সেই পিতা আহমদ বাদায়ুনি কে হারান। এরপর মা জুলেখার সাথে দিল্লীতে চলে আসেন ষোড়শ শতকে ভারত সম্রাট আকবরের সভাসদ আবুল ফজল এর আইন-ই-আকবরী তে রয়েছে নিজামুদ্দিনের উল্লেখ। নিজামুদ্দিন কুড়ি বছর বয়সে, পাকিস্তানের পাকপাত্তানে যান, যা তখন আজোধান নামে পরিচিত ছিল এবং সেখানেই আর এক প্রবাদপ্রতিম সূফি সাধক ফরিদ উদ্দিন গঞ্জেশকারের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। প্রথমে নিজামুদ্দিনের কোনো স্থায়ী বাসস্থান দিল্লি তে ছিলনা, একটি খানকায় তিনি শিষ্য দের সাথে সাক্ষাৎ করতেন, উপদেশ দিতেন, খানকাটি লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠতো, বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ এসে ভিড় জমাতো নিজামুদ্দিনের দরবারে। তার শিষ্যের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০০, শোনা যায় কিংবদন্তি কবি আমীর খসরু ছিলেন নিজামুদ্দিনের শিষ্যদের মধ্যে অন্যতম। ১৫৬৩ সালে দিল্লিতে নিজামুদ্দিনের দরগার বর্তমান কাঠামোটি তৈরী করে দেন ফরিদুঁ খান, আজও সেখানে নিজামুদ্দিন আর আমির খসরুর মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয় শ্রদ্ধার সঙ্গে।