এখন রাত জেগে কাজ করাটা অনেকেরই নেশা হয়ে দাড়িয়েছে| অনেক অফিসও এখন ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকে| দিনের পর দিন নাইট শিফট করার ফলে বদল ঘটে নিত্যদিনের রুটিনে| বদলে যায় খাওয়ার সময় থেকে ঘুমের সময়| সম্পূর্ণ দিনটাই যেন বদলে যায় তাদের কাছে| যখন গোটা পাড়া ঘুমোচ্ছে তখন আপনি অফিসে কাজ করছেন| অনেক সময়েই আপনি কাজের সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন| আর সাথে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনেন আপনার প্রাত্যহিক জীবনে|
সম্প্রতি একটি গবেষণা থেকে উঠে এসেছে এক ভয়ংকর তথ্য| জানা গেছে, দীর্ঘদিন রাতে কাজ করার ফলে বদলে যেতে পারে আমাদের ডিএনএর গঠন| শরীর থেকে বিদায় নিতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও| কিভাবে? চলুন জানা যাক|
ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড অর্থাত ডিএনএ| মানবদেহই শুধু নয় পৃথিবীর বেশিরভাগ প্রাণীর কোষের মূল উপাদান হলো এই ডিএনএ| আর দীর্ঘদিন কাজ করার ফলে বদল ঘটে এর গঠনে| তার সাথে সাথেই বদল ঘটে যায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাতেও|
প্রতিদিন নাইট শিফটে কাজ করার ফলে পরিবর্তন ঘটে ঘুমের অভ্যাসে| তার ফলে শরীরের মধ্যে অধিষ্ঠান করা বায়োলজিকাল ঘড়ি বা সার্কাডিয়ান রিদমের মধ্যে আসে পরিবর্তন|এই পরিবর্তনটি আসার ফলে মানুষের শরীরে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়| এছাড়াও অপরিমিত ঘুমের কারণে শরীরে ওবেসিটি আসার সম্ভাবনাও থাকে| জানা গেছে, মাত্র তিন সপ্তাহ ঠিকমত কাজ, খাওয়া এবং ঘুম এই তিনটির মধ্যে ব্যালেন্স না করতে পারলে শরীরের মেটাবলিক রেট অস্বাভাবিক হারে কমতে শুরু করে| আর তার ফলে বছরের শেষে দেখা যায় প্রায় ১০ পাউন্ড ওজন বেড়েছে|
অন্যদিকে, দিনের বেলার তুলনায় রাতের বেলা ঘুম সাধারনত বেশি ভালো হয় কারণ রাতের দিকে পরিবেশে শব্দ কম থাকে| চারপাশ শান্ত থাকার কারণে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে না| কিন্তু দিনের বেলা ঘুমোনোর জন্য গেলে তখন চারদিকের নানা শব্দ ছাড়াও দিনের আলো কোনোটাই ঘুমের জন্য অনুকূল নয়| তাই দিনের বেলা ঘুমানোর শত চেষ্টা করলেও রাতের মত পারফেক্ট ঘুম কোনো সময়েই হয় না| সেই কারণে চিকিত্সকেরাও রাতেই ঘুমোনোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন| তাই শরীর সুস্থ রাখার তাগিদে নাইট শিফটকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন|