শিক্ষাজীবনে ভালো অভ্যাস তৈরী করা অবশ্যই ভালো, কিন্তু তা মেনে চলে এমন ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা নগণ্য। যেমন আজকাল দেশ ও দশের খবর সম্পর্কে অবগত নয় এদের অনেকেই। কারণ তাদের আশেপাশে ঘটে চলা ঘটনার বিষয়ে জানার আগ্রহ বা কৌতূহলটাই নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু এই অভ্যাস যদি ছোট থেকেই তৈরী না হয় তাহলে পরবর্তীকালে তা গড়ে তোলা সমস্যাজনক। তাই ছাত্রীদের সচেতন করার এক নতুন উপায় বের করেছে কলকাতার ঢাকুরিয়ার বিনোদিনী গার্লস স্কুল। ছাত্রীদের মধ্যে খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস যাতে তৈরী হয় তাই এই অন্যরকম প্রচেষ্টা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের। ছাত্রীরাও কিন্তু বেশ খুশি এই উদ্যোগে।
খবরের কাগজ পড়লে যে শুধু খবরই জানা যায় তা নয়, পড়ুয়াদের পড়ার অভ্যাসও তৈরী হয়। এটি তাদের পড়ার ও লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি করে, শব্দের ব্যবহার সম্পর্কে অবগত হয় তারা, ইংরেজি চর্চার জন্য ইংরেজি খবরের কাগজ পড়ার কথা কিন্তু বলাই হয় ছাত্রছাত্রীদের। তাই এই উদ্যোগ এই স্কুলের ছাত্রীদের উন্নতি করবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। এই নিউজপেপার পর্ব চলে টিফিনের শেষে। ঠিক দুপুর দুটোয় শেষ হয় টিফিন, তারপরেই অষ্টম ও নবম শ্রেণীর কয়েকজন ছাত্রী বড়দির ঘরের সামনে থাকা স্পিকারে কয়েকটি নির্বাচিত খবর পড়ে শোনায় যা প্রতিটি ক্লাসরুমে থাকা ছাত্রীরা শুনতে পায় ক্লাসে থাকা স্পিকারগুলির মাধ্যমে। টিফিনের শেষে প্রায় পাঁচ-সাত মিনিট ধরে চলে এই পর্ব, তারপর শুরু হয় নতুন ক্লাস।
মাসখানেক হল চালু হয়েছে এই নিয়ম। 'ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় ছাত্রীরা যে খবর শুনছে এভাবেই আস্তে আস্তে তাদের মধ্যে তৈরী হবে খবর জানার আগ্রহ'- বলেন এক শিক্ষিকা। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দীপান্বিতা রায়চৌধুরী বলেন যে তিনি আগে অনেকবারই তাঁর ছাত্রীদের খবরের কাগজ পড়ার কথা বলেছেন কিন্তু তেমন কর্ণপাত করেনি কেউই। তাই এবার এই নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে। খবরের কাগজ রাখা থাকবে দুটি ফ্লোরেই, বিনোদনের খবর বাদ দিয়ে ছাত্রীরা বেছে নেবে কিছু খবর এবং তা ছোট করে লিখে, পড়ে শোনাবে মাউথ স্পিকারে। শিক্ষিকা হিসাবে যাদের কাজ শিক্ষার্থীকে সঠিক পথে চালনা করা তার এক দৃষ্টান্ত তৈরী করেছে এই স্কুল।