আফ্রিকার নিউইয়র্ক

চাদ। আফ্রিকার এই দেশটি পৃথিবীর গরীবতম রাষ্ট্রগুলির মধ্যে একটি। ন’ডিজমনা চাদের রাজধানী। জীবন যাত্রার খরচ লন্ডন নিউইয়র্কের থেকে অনেক বেশি। আফ্রিকার এই দেশটিতে থাকতে গেলে দু’কামরার ফ্ল্যাটের জন্য মাসে খরচ করতে হবে ২ হাজার ডলার। যা পাল্লা দিতে পারে পৃথিবীর প্রথম সারির যে কোনও শহরকে।      

সাহারা মরুভূমির প্রান্তে এই শহরটি আফ্রিকার সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর। তবে যদি ভাবেন বিলাসিতার কারণে তা একেবারেই ভুল ধারনা, চাদ ব্যয়বহুল দারিদ্রের কারণে। দারিদ্রের কারণেই এই দেশ সারা বিশ্বের মধ্যে একাদশ স্থানে আছে। মরু জলবায়ুর কারণে চাদকে "আফ্রিকার মৃত হৃদয়" বলা হয়। একসময় ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে  স্বাধীন হয়।  

জীবনযাত্রার খরচ এতটাই যে শহরের বাসিন্দারা অনেকেই এই শহর ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। রাস্তার ধারের দোকানে লাঞ্চ বা ডিনার করতে ব্যয় করতে হবে ২ হাজার সিএফএ ফ্রাঙ্ক। আর সেই খাবার বাড়িতে এনে খেতে চাইলে খরচটা এক ধাক্কায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রান্তিক অবস্থান, উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব, আর তেল নির্ভর অর্থনীতি এখানকার জীবনযাত্রাকে এতটাই কঠিন করে তুলেছে যে তার প্রভাব পড়েছে সব ক্ষেত্রেই। জামাকাপড় থেকে শুরু করে সবটাই বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়।

চাদের মোট জন সংখ্যা ১৬ মিলিয়ন। অধিকাংশই দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করে। বাড়ি কেনা বা ভাড়া নেওয়ার ব্যয় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে প্রতিবছর। বাড়ছে ‘হোমলেস’র সংখ্যা। আর যাদের  আর্থিক সামর্থ্য আছে তারা অন্য শহরে চলে যাচ্ছে। আশ্রয়হীন হয়ে পথবাসী হওয়ার চেয়ে ‘অন্য শহর’ তাদের কাছে সহজ সমাধান। অনেকেই আবার শুধুমাত্র সামাজিক নিয়মের গেরোয় আটকা পড়ে থেকে যাচ্ছেন, এই শহরে। বিদ্যুৎ, জলের মতো জরুরী নাগরিক পরিষেবা এখানে বিলাসিতা মাত্র।  

চাদে বাড়ি তারাই তৈরি করেন, যাদের এই বিপুল জীবন যাত্রা ব্যয় বহন করার ক্ষমতা আছে।  

আর্থিক সংকটের কারণে আফ্রিকার অন্যন্য শহরের তুলনায় এখানে অপরাধের হারও বেশি।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...