রেল ইঞ্জিন উৎপাদনে চিত্তরঞ্জন বিশ্বরেকর্ড করল

২০১৯ সালে ৪৪৬টি বৈদ্যুতিক ইঞ্জিন নির্মাণ করে চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা বিশ্বরেকর্ড করল। গোটা বিশ্বে এখনও পর্যন্ত কোনও কারখানাতে এক বছরে এতগুলি বৈদ্যুতিক রেল ইঞ্জিন নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।

                   চিত্তরঞ্জনের জেনারেল ম্যানেজার প্রবীণকুমার মিশ্র কারখানার সমস্ত স্তরের কর্মচারী এবং আধিকারিকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি জানান, সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় এত বড় সাফল্য পাওয়া গেছে। রেলমন্ত্রী এই কারখানার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে জানান, আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তিনিও সবাইকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন। বাবুল সুপ্রিয় আরও জানান, জেনারেল ম্যানেজারকে তিনি আলাদা করে চিঠি পাঠাবেন। চিত্তরঞ্জন রেল কারখানার জনসংযোগ আধিকারিক মনতার সিং জানিয়েছেন, বর্তমানে ওই কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা ২০০টি ইঞ্জিন তৈরী করার মত। ২০১৪ সালে ২৪২টি, ২০১৫ সালে ২৭৩, ২০১৬ সালে ২৭০, ২০১৭ সালে ৩২৫, ২০১৮ সালে ৩৮৭ টি ইঞ্জিন তৈরী হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯-এ সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ৪৪৬টি ইঞ্জিন তৈরী করে বিশ্বরেকর্ড করে ফেলল প্রাচীন এই রেল ইঞ্জিন তৈরির কারখানাটি। 

                                                   ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের নামে এই রেল ইঞ্জিন তৈরির কারখানায় প্রথম উৎপাদন শুরু হয়। সেই সময় যেহেতু বাষ্পের মাধ্যমে ট্রেন চলত, তাই বাষ্পীয় রেল ইঞ্জিন তৈরী হত শুরুর সেই সময়ে। তারপর যথাক্রমে ডিজেল সান্টার ইঞ্জিন এবং পরে বৈদ্যুতিক রেল ইঞ্জিন তৈরী করা শুরু হয় এই কারখানায়। এখানে মোট ২৩৫১টি বাষ্পীয় ইঞ্জিন এবং ৮৪২টি ডিজেল ইঞ্জিন তৈরী হয়েছিল। তারপর শুরু হয় বৈদ্যুতিক ইঞ্জিন তৈরির পালা। এখনও অব্দি অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭০৯০টি বৈদ্যুতিক রেল ইঞ্জিন তৈরী করা হয়েছে এই কারখানায়। রাজধানী, শতাব্দি এক্সপ্রেস, কালকা মেল, দুরন্ত এক্সপ্রেসের মত দ্রুতগতিসম্পন্ন ট্রেনে এখানকার তৈরী ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। আগে এখানে ৩৯০০ অশ্বশক্তিসম্পন্ন বৈদ্যুতিক ইঞ্জিন তৈরী হত। শ্রমিকদের দক্ষতা এবং কর্তৃপক্ষের সঠিক পরিকল্পনার ফলে ৫০০০ অশ্বশক্তি এবং পরে ৬০০০ অশ্বশক্তির বৈদ্যুতিক রেল ইঞ্জিন তৈরী করা শুরু হয়। এখন এখানে ৯০০০ অশ্বশক্তির রেল ইঞ্জিন তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যা যাত্রীবাহী ট্রেনে ব্যবহার করা যাবে। এর আগে পণ্য পরিবহনের জন্য ৯০০০ অশ্বশক্তিসম্পন্ন রেল ইঞ্জিন তৈরী করা হয়েছে, এবারে যাত্রী পরিবহনের জন্য নতুন ইঞ্জিন কতটা কার্যকরী হয়, তা দেখার।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...