প্রচন্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সকলের। এই অত্যধিক গরমে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায় বাড়ির পোষ্যরা। তারা অবলা, নিজের কষ্টের কথা প্রকাশ করতে পারে না। প্রচন্ড গরমের সময় তাদের দেখা যায় ঠান্ডা জায়গা খুঁজতে, জিভ বার করে হাঁপাতে। এইসব হলো তাদের অত্যধিক গরম লাগার লক্ষণ। অনেকেই আমরা পোষ্যদের এসি ঘরে রাখার ব্যবস্থা করে থাকি। কিন্তু সকলের পক্ষে তা সম্ভব হয় না। ফলস্বরূপ অসুস্থ হয়ে পড়ে সেই পোষ্য। আজকাল শহরে পশুচিকিৎসকের সংখ্যা কম না হলেও অকৃত্রিম চিকিৎসক খুব কম দেখতে পাওয়া যায়। তাছাড়া রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমান হাসপাতালের অভাব। এর ফলে অনেক সময়েই সামান্য জ্বরেই চিকিৎসার অভাবে চলে যায় ছোট্ট একটা প্রাণ। সেরকম ঘটনা যাতে আবার না ঘটে সেই জন্য সল্টলেক এলাকায় পোষ্যদের জন্য খুলেছে একটি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট।
গরমে পোষ্যদের নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় সকলকেই। শহরে পশু হাসপাতাল সেরকমভাবে উন্নত প্ৰযুক্তিযুক্ত না হওয়ার কারণে চিন্তিত হয়ে পড়েন পোষ্যের মালিকও। পশুচিকিৎসকগণ নিজেরাই জানান, অন্য সব মেট্রো শহরের তুলনায় কলকাতা এই ব্যাপারে এখনো অনেকটাই পিছিয়ে। কিন্তু সল্টলেকে যে নতুন হাসপাতাল খোলা হয়েছে তা পশুচিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি মাইলস্টোন হিসেবে দেখা দিতে পারে। ইতিমধ্যে বেলগাছিয়ায় একটি পশু হাসপাতাল হয়েছে। এছাড়াও শহরের বেশ কিছু জায়গায় পশু হাসপাতাল রয়েছে কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। পশুদেরও ভেন্টিলেশন এবং অ্যানাস্থেশিয়া প্রয়োজন। কিন্তু এই পরিকাঠামো এখনো শহরের পশু হাসপাতালগুলিতে নেই।সম্প্রতি সল্টলেকে গড়ে ওঠা হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্র এই দুটিতেই পশুদের জন্য ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। কোনো পোষ্যের যদি অপারেশনের দরকার পড়ে তখন ভেন্টিলেশন এবং অ্যানাস্থেশিয়া এই দুইয়েরই দরকার হয়। তাই নতুন হাসপাতালে থাকছে এই দুই প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি।
জানা গেছে, নতুন এই হাসপাতালে থাকছে ওপিডির ব্যবস্থাও। সকাল ১০টা থেকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত চলবে ওপিডি। তার পরবর্তী ১২ ঘন্টা চলবে জরুরি বিভাগ। সূত্রের খবর, হাসপাতালে একসাথে ৯টি বিড়াল এবং ১৫ থেকে ১৬ টি সারমেয় রেখে চিকিৎসা করানোর মতো পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। হাসপাতালে যথারীতি অপারেশন থিয়েটার, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট সমস্তটাই থাকছে। এছাড়াও এই হাসপাতালটিতে পোষ্যদের জন্য এক্সরে মেশিন এবং প্যাথোলজিকাল ডিপার্টমেন্ট ও রয়েছে। ২৪ ঘন্টা পরিষেবাযুক্ত এই হাসপাতালে সারমেয় এবং মার্জারের চিকিৎসার পাশাপাশি থাকছে গিনিপিগ এবং পাখির চিকিৎসার ব্যবস্থাও।
তবে স্ট্রেসের শিকার হওয়া পোষ্যরা তার মালিককেই খোঁজে। অসুস্থতার সময়েও তারা চায় তাদের মালিক তাদের পাশেই থাকুক। সেই জন্য অনেকেই পোষ্যদের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করতে চান। যদিও ব্যস্ততার যুগে দাঁড়িয়ে সবসময় সম্ভব হয় না বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করানোর। তাই এরকম হাসপাতাল আরও গড়ে উঠুক শহরের বুকে চান সকল পশুপ্রেমীরা।